চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের পুরোধা বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা চট্টলবন্ধু আলহাজ্ব এস এম জামাল উদ্দিনের ১২ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৮ জুলাই। মরহুম এস.এম জামাল উদ্দিন ছিলেন হাটহাজারী মাদার্শা গ্রামের প্রথম মুসলিম ডিগ্রি পাশ ব্যক্তি হেদায়েত আলী মাস্টারের ২য় ছেলে। জামাল উদ্দিন সাহেব জন্মের পরপরই বাবা হেদায়েত আলী মাস্টার মৃত্যুবরন করেন। হেদায়েত আলী মাস্টার ছিলেন চট্টগ্রাম শহরের মুসলিম হাই স্কুলের শিক্ষক। জন্মের পর থেকে এস এম জামাল উদ্দিনের জীবন-যুদ্ধ শুরু হয়। স্কুলে অধ্যায়ন কালীন রাজনীতির সাথে জড়িত হন। এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর অঙ্গ সংগঠন শ্রমিক লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের বিভাগীয় শ্রম সম্পাদক ছিলেন। তখন সভাপতি ছিলেন এম এ হান্নান (যিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে) এস এম জামাল উদ্দিন স্বাধীনতা যুদ্ধে- মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন এবং জীবন বাজি রেখে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শ্রমিক সংগঠনকে পুরো দেশে সংগঠিত করেন। বঙ্গবন্ধু যখন বাকশাল গঠন করেন তখন তিনি বাকশালের চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সোচ্ছার ছিলেন। বর্ষিয়ান নেতা আবদুর রাজ্জাক বাকশাল পুনর্গঠন করলে এস এম জামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন, তিনি ৭৯ সালে বাকশাল থেকে জিয়াউর রহমান সরকারের সময় জাতীয় নির্বাচনে হাটহাজারী আসন থেকে নির্বাচন করেন, তখন এস এম জামাল উদ্দিনের প্রতিদ্বন্দী ছিলেন ব্যারিস্টার জনাব আনিসুল ইসলাম মাহামুদ চৌধুরী। এস এম জামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। এস এম জামাল উদ্দিন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করতেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় ভাবে তখন শোক দিবস পালিত না হলেও এস এম জামাল উদ্দিন বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিয়মিত শোক দিবস পালন করতেন। এস এম জামাল উদ্দিন এর সামাজিক ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে ইতিহাস এ লেখায় পুরো তুলে ধরা সম্ভব নয়। এস এম জামাল উদ্দিন সাংসারিকভাবে খুবই উদাসীন ছিলেন। পুরো পরিবারকে রাজনৈতিক ও উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির কর্মকান্ডের ব্যবহার করতেন। উনি বিয়ে করেছিলেন চট্টগ্রাম মুনসুরাবাদের জমিদার খান বাহাদুর আব্দুল হাকিম মিয়ার ছেলে শফি মিয়ার কন্যাকে। এস এম জামাল উদ্দিনের দু’ছেলে, দু’মেয়ে বড় মেয়ে ডাক্তার। এস এম জামাল উদ্দিন এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি, চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম এবং এস এম জামাল উদ্দিন স্মৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক পৃথক ভাবে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করবেন।