সাল ২০১৪ তখন আমি সরকারী কলেজে ছাত্র রাজনীতি করি। ছাত্র রাজনীতি করার কারনে সে সময় কলেজ ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে নিয়ে ছাত্রদের দাবি আদায় ছিলাম বলিষ্ট কন্ঠ। এখনও জড়িত আছি ছাত্র রাজনীতির সাথে পাশাপাশি সাংবাদিকতা করছি।যায় হোক নিজের জীবনের অনেক কথা বললাম এখন আসছি মূল বিষয় আজ ১৪ তারিখ সবাই তাদের ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকবে যদিও আমি থাকতাম এক সময় তবে এখন আর নই। আসলে ভালোবাসা দিবসটাকে কোন কারনে তৈরী তার সঠিক ব্যাখা আমি বলতে চাচ্ছি না সেটা সবারই কম বেশি জানা আছে। তবে আমরা যারা যুবক তারা এই দিন টাকে অন্য ভাবে পালন করি। সবার যেমন একজন আপন মানুষ থাকে বলতে ভালোবাসার মানুষ তেমনি আমারো ছিলো তবে এখন আর নেই অন্য কারে হয়ে গেছে বেশ কয়েক মাস আগে। এবার আসি তার বিষয় নিয়ে সেই ১৪সালে কলেজ রাজনীতি করার সময় তার সাথে কোন একটা সময় কোন একটা ক্রান্তি লগ্নে দেখা। তার সাথে ভালোবাসা আদান প্রদান করা। চলতে থাকে ফোনে কথোপকথন। কখনও কয়েক ঘন্টা আবার কখন ব্যাস্ততার কারনে কয়েক মিনিট আবার সারাদিন কথা না বলে রাতে কথা বলা এভাবে চলতে থাকে আমাদের রজ্ঞিন জীবন পার করলাম একটি বছর। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিত সে ফোন দিয়ে। আসল এমনি একটা ১৪ ফেব্রুয়ারি সেদিন আমরা দু’জন কথা দিয়ে ছিলাম অন্যরা যেভাবে দিনটা পালন করে আমরা সে ভাবে দিনটা পালন করবো না। একটা কথায় ভালোবাসা দিবসটাকে স্বরণীয় করে রাখার জন্য আমরা অন্য ভাবে করবো। তবে তার প্রথমে এই বিষয় টিকে নিয়ে একটু দ্বিমত ছিলো। পরে অবশ্য একই মতে আসে। চলতে থাকে সেই তার সাথে দেখা করা কখনও তার আসতে দেরি হলে একটু রাগ করা আবার আমার দেরি হলে তার খুনসুটি করা কখন আমার জন্য সে ঘন্টার পরে ঘন্টা অপেক্ষা করতে থাকা। আবার তাকে একটা নজর দেখার জন্য কত প্রতিক্ষায় থাকা দেখা করা। আগে বলেছি ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম তাই অনেক সময় তার সাথে দেখা করতে আমার অবশ্য দেরি হত। এভাবে পার হলো আর একটি বছর। কখনো তার আবাদার গুল মেটানোর চেষ্টা আবার সে কখনও এটি আমাকে শাসন করা। তখন নিজেকে মনে হতো পিতা,মাতা,বোনের পরে যদি কেও শাসন করার থাকে, সেটা হচ্ছে সে। শাসনের মাত্রা এতো তিক্ত তায় পৌছে যেত কখনও কখনও আমাদের মুখ দেখা দেখি বন্ধ হতো তবে এটা আমাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ছিলো। তার আর আমাকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তো দু’টি বছর পার করলাম লিখনির মাধ্যমে কিন্তু সেই তার নামটি বলা হয়নি তার নামটি হলো আয়শা আক্তার আছমা তবে আমি ডাকতাম আশা নামে। তখন সবেমাত্র সে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষ পড়তো। হঠাৎ করে আমি কোন একটা কারনে বাড়ি থেকে চলে গিয়ে ছিলাম ঢাকাতে যাওয়ার সময় তাকে কথা দিয়ে ছিলাম ১মাসের মধ্য ফিরে আসবো কিন্তু সে কথা রাখতে পারলাম না। ঢাকাতে থাকা হলো কয়েক মাস তবে তার সাথে ফোনে কথা চলতে থাকলো কিন্তু হঠাৎ করে আমার ফোনটি নষ্ট হবার কারনে তার সাথে কথা বলতে পারলাম না কয়েক মাস। কয়েক মাস পরে অন্য একটি নাম্বার দিয়ে ফোন দিলাম আমার আপন মানুষটির কাছে ফোন দিলাম। কয়েক বাড় ফোন দেবার পরে রিসিভ হলো। ও পাশ থেকে আওয়াজ হলো করে। আমি বললাম আমি তখন আমার গলার আওয়াজ শুনে কাদা শুধরো হলো, প্রশ্ন করতে থাকলো – এতদিন কোথায় ছিলে, ফোন দেননি কেন,আমার সাথে কথা না বলে থাকতে তোমার কষ্ট হয়নি একটুও কি আমার কথা মনে পরেনি? এমন শত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আমি যেন হারিয়ে উঠলাম কান্না আমরাও পারছিলো।তখন তার ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল দিয়েছে।জ্ঞিগাসা করলাম কোথায় ভর্তি হয়েছে। উত্তরে বললো, হ্যা সাতক্ষীরা তে। আমি বললাম রিলিজ নিয়ে তালাতে আসো। সে বললো তুমি এসে রিলিজ নাও। অগত্যায় বললাম ঠিক আছে আসছি। তার পরে আমার প্রচন্ড জ্বর এলো সেই জ্বর অবস্থায় বাড়িতে আসলাম। দেখা করলাম তার সাথে জড়িয়ে ধরে কান্না করলো আর বললো আমাকে না দেখে তোমার কষ্ট হয়নি উত্তরে বললাম হ্যা হয়েছে। তুমি যতটা কষ্ট পেয়েছে ততটায়। অবশেষে তাকে তালা মহিলা কলেজে রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করা হলো।এ-র মধ্য আশার নানা ষ্টোক করে তালা হাসপাতালে ভর্তি হল।ওর নানাকে দেখতে গেলাম কথা হল ওর নানীর সাথে।চলতে থাকলে আমাদের ভালোবাসার ৪টি বছর।তালাতে মেলা চলছে সে আবদার করলো মেলায় যাবে আমিও সাই দিলাম। মেলাতে ও আমার ওপর বান্ধবী আসলো গেলাম চটপটি খেতে আমরা ছিলাম ৪ জন কিন্তু ও দোকানদারকে ৩ প্লেটের অর্ডার দিল। আমি একটু অবাক হলাম পরে বুজলাম দু’ জন করে একটা প্লেট এ খেতে হবে। সে আর আমি খেলাম ও তাই। তার একটি অভ্যাশ ছিল তার বাড়ি যদি পেয়ারা হতো সেই পেয়ারা টাকা নিয়ে আসতো দুজনে একটা সাথে খাবে বলে। শুধু পেয়ারা নেই এমন অনেক কিছু আনত বাড়ি হতে। মহিলা কলেজে পড়ার দরুন আমাদের দেখা হতে একটু কমে তবে তাতে কিন্তু ভালোবাসার কমটি ছিলো না। এমনতো হতো আমার সাংবাদিকতা করার জন্য একটা অফিস ছিল সেখানে সে এসে আমার চেয়ারে বসে ফোন দিয়ে বলত কোথায় আপনি বলতাম অফিসে আছি সে বলতো কই। তখন আমি দৌড়ে অফিসে এসে দেখতাম সে বসে আছে ওপর সাথে কথা বলতে বলতে এগিয়ে দিয়ে বাড়ির দিকে। আবার কোন দিন নিরিবিলি জায়গায় দাড়িয়ে কথা বলা হতো ঈদের সময় আসলে আমার সাথে না করে তার না খাওয়া। মাঝে মাঝে তাকে ম্যাডাম বলে ডাকা কারন সে ব্যাক স্কুলে শিক্ষকতা করতো। মাঝে মাঝে নিজদের মধ্য রাগা রাগি করা। এভাবে পার হলো ৫টি বছর। চলছে আমাদের প্রেম আলাপন কথা দিয়েছিলাম দু’জন একটা অপর কেও ছেড়ে যাব না। কিন্তু বিধিবাম হলো তার সাথে একদিন একটু রাগা রাগি করে কথা বললাম না৷ সে ফোন দিলো ৫০ বারের অধিক। সারাদিন পরপর আমারও খারাপ লাগলো। যার সাথে এক মুহর্ত কথা না বলে থাকতে পারি না তার সাথে সারা দিন কথা বললাম না। আমি বাজারে গিয়ে ফোন টাকা লোড দিলাম এবং চলে গেলাম খেজুরবুনিয়া বাজারে একটা সাংবাদিক ভাইয়ের দোকানে ভাবলাম নিরিবিলি কথা বলবো। হঠাৎ করে একটি ফোন এলো ভাই ভাবির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে শুনে আমার মাথার উপর যেন বাজ পরলো। এই ভাবি বলে আমার ছোট ভাইয়েরা অনেকে তাকে ডাকতো তাতে সে রাগ করলেও মনে মনে খুশি হতে। আমি মটর সাইকেল নিয়ে গেলাম ওপর বাড়িতে চলছে বিয়ের আয়োজন তাকে ডাকলাম প্রশ্ন একটায় তুমি সুখে থাকবে উত্ত র পেলাম না তবে মৌন সম্মতি নিয়ে ফিরে এসে অনেক কান্না করলাম নিজে। মনকে বুজ দিতে পারলাম না। সবাই থেকে বড় বিষয় হলো ওর বিয়েতে যে মাইক্রো ভাড়া করা হয়েছিলো সেটা আমার চাচার আর ড্রাইভার ছিলো আমার ভাই নামক শত্রু। করান সে আমাদের বিযয়ে সব জানতো তবু সে কোন প্রকার পদক্ষেপ নিয়নি। তার বিয়ের কয়েকদিন পরে আপনাকে ফোন দিল ও অন্য একটা নাম্বার থেকে আমি অনুরোধ করলাম তাকে ফিরে আসার জন্য। কিন্তু সে আসলো না তবে এমনি কয়েকটি নাম্বার থেকে ফোন দিত। নিজের জীবনপাত ঘটলো অবসানের পথে প্রায় ৬-৭মাস হয়ে গেলাম জ্ঞানহীন ২মাস বিছানা ধরা। এখনো আছি অনেকটা তেমনি। তবে একটায় প্রশ্ন তার কাছে কি দোষ ছিলো আমার?
লেখক: সাংবাদিক
কি দোষ ছিলো আমার?–এসএম হাসান আলী বাচ্চু
পূর্ববর্তী পোস্ট