
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরায় বেসরকারি হাসপাতালে তথ্য সংগ্রহের জেরে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মামলা দায়ের করেছে । সাংবাদিকের দায়ের করা মামলাটি সোমবার (১০ মার্চ) রাতে রুজু করেছে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এদিকে, কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা থানার ওসি’র বিরুদ্ধে। বুধবার (১২ মার্চ) ডাঃ হাফিজউল্লাহ বাদী হয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেন।
অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অর্থপেডিক্স সার্জারীর কনসালটেন্ট এবং সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারের পরিচালক। অপরদিকে, মনিরুল ইসলাম মনি জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজটুয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম জানান, শহরের নারকেলতলা এলাকার বেসরকারি হাসপাতাল ট্রামা সেন্টারে তথ্য সংগ্রহের সময় হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ হাফিজউল্লাহ সহ তার স্টাফরা যৌথভাবে আমার উপর হামলা করে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
হামলার সামগ্রিক ভিডিও ফুটেজ দেখে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি দায়ের করা মামলাটি রুজু করেছে। মামলা রুজু হওয়ার দুই দিন পর একটি কাল্পনিক মামলা সাজিয়ে থানায় জমা দিয়েছে ডাঃ হাফিজউল্লাহ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগটি কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া রুজু করেছে। এভাবে যদি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত ছাড়া মামলা হয় তাহলে সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা হারাবে। একটি সত্য ঘটনা কে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য মামলাটি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আজ সকালে ওসি আমাকে ফোনে করে বিষয়টি মিমাংসা করতে বলেন। আমি রাজি হয়নি। আমার মামলা দায়ের করার দুইদিন অতিবাহিত হলে ডাঃ হাফিজউল্লাহকে রক্ষা করতে পরিকল্পনা করে মামলাটি গ্রহণ করেছে ওসি। বিষয়টি পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা মামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার চার দিন পর কাউন্টার মামলা হওয়ায় প্রমাণ হয় এটি একটি সাজানো মামলা। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সাতক্ষীরা ক্লিনিক মালিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম বাবলা, আমরা এ বিষয়ে বসেছিলাম। কিভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে মামলার বিষয়টি আমি অবগত নয়। এখানে এ্যাসোসিয়েশনের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শামিনুল হক বলেন, সাংবাদিক মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। ঘটনায় উভয় পক্ষ্যের মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।
কোন তদন্ত ছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি কোন স্বদত্তর দিতে পারিনি।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে যাচায় বাছায় করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলা হয়েছ। সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।