সাতনদী অনলাইন ডেস্ক: চট্টগ্রামে নিম্নবিত্ত পরিবারের কিশোরীদের নিয়ে ভয়ংকর খেলায় মেতে উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বেচে দেয়া হচ্ছে দেহ ব্যবসার জন্য গড়ে ওঠা ফ্ল্যাটে। দেহব্যবসায় রাজি না হলে বা পালানোর চেষ্টা করলে চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। একটি ফ্ল্যাট থেকে দুই কিশোরীকে উদ্ধারের পর বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এমন নানা তথ্য।
অজ্ঞাতানামা এক খদ্দেরের তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে দুই কিশোরী এবং এক তরুণকে আটক করে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরীর মধ্যে একজনের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি চান্দগাঁও থানায় জিডি করেছিল তার ভাই। এই কিশোরীকে প্রেমের অভিনয়ের ফাঁদে ফেলে এখানে বিক্রি করেছিল বেলাল নামে একজন।
ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার মোহাম্মদ হাসান বলেন, দালাল প্রেম করে নিয়ে আসে। এরপর এখানে বিক্রি করে টাকা ভাগ করে চলে যায়।
উদ্ধার হওয়া অপর কিশোরীকে কাজ দেয়ার কথা বলে আটকে রেখে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেছিল এই চক্রের সদস্যরা।
ওই ফ্ল্যাট থেকে বেশ কয়েকবার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিশোরীরা। প্রতিবারই তাদের মারধর করে আটকে রাখা হয়। এমনকি দেহ ব্যবসায় রাজি না হলে চালানো হতো অমানুষিক নির্যাতন। আরো কয়েকজন কিশোরী ওই ফ্ল্যাটে থাকলেও পুলিশের অভিযানের আগে তাদের অন্য স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরী।
কিশোরীরা জানান, আমাদেরকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করতো। যদি রাজি না হতাম তাহলে নানাভাবে মানসিক নির্যাতনসহ অমানুষিক অত্যাচার চালাত।
পুলিশের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে তিনটি পর্যায়ে চলে নিম্নবিত্ত পরিবারের কিশোরী কেনাবেচা। এ ধরনের অন্তত ৮টি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে নগরীতে।
সিএমপি ডবলমুরিং থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসিন বলেন, আমরা চার জনের নাম পেয়েছি। এখানে আরও আট-দশজনের চক্র রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এছাড়াও কেয়ারটেকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ এখন পর্যন্ত সংঘবদ্ধ এই চক্রের ৮ জনের নাম নিশ্চিত হলেও বিস্তারিত তথ্য পায়নি। ফলে তাদের আইনের আওতায় আনতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।