কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম পতেঙ্গায় রয়েছে তেল চোরাচালনের অভিনব সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে নিয়ম মতে একেকদিন একেক গ্রুপ তেল চুরিতে অংশ নেয়। চোর সিন্ডিকেটের ভাষায় যার নাম সিরিয়াল। এই সিরিয়ালে রয়েছে চট্টগ্রামের একাধিক প্রভাবশালীদের নাম। তারই একজন গডফাদার গাভী ইলিয়াছ। যে কিনা তেল চোরাচালানে প্রশাসনের তালিকায় অবস্থান রয়েছে শীর্ষে। এই চোরাই ব্যবসায় ৮০র দশক থেকে সে অতপ্রতভাবে জড়িত রয়েছে বলে জানাযায়। রাতারাতি বনে গেছে কোটিপতি। তাঁর বিরুদ্ধে যেমন রয়েছে জাহাজ থেকে তেল চুরির অভিযোগ তেমনি রয়েছে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, জমি দখল, ধর্ষন, হত্যা, সাগরে ডাকাতিসহ অসংখ্য অপরাধের। তার বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলা রয়েছে বলে জানাযায়। তার সাথে সখ্যতার রয়েছে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের। যার দরুন তার আধিপত্ত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ইলিয়াছ এক সময় বার্মা থেকে চট্টগ্রামে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী রিয়াজউদ্দিন বাজারের মনজু সওদাগর ইয়াবার চালান নিজের ট্রলারে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসতো এবং বিজয় নগরের টোকাই ফারুকের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করতো বলে জানাযায়। ওস্তাদ মনজু র্যাবে হাতে নিহত হওয়ার পর ইলিয়াছ নিজেই ইয়াবা সহ অপরাধ জগতের গডফাদার বনে যান। বর্তমানে তেল চোরাকারবারের পাশাপাশি তার রয়েছে নিরহ জেলেদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি। পতেঙ্গা সমূদ্রে তার রয়েছে অবৈধ ফাড়ের ব্যবসা। প্রতিবছর অর্ধশতাধিক ফাড় বিক্রি করে থাকে। প্রতিটি ফাড়ের মূল্য দুই হতে পাঁচ লক্ষ টাকা। ফাড়ের ব্যবসার জেলেদের বৈধতা থাকলেও গাভী ইলিয়াছ তার ক্ষমতা বলে সাগরের ফাড় গুলে দখল করে নেয়। তার কথার বাইরে ফাড়ে কেউ মাছ ধরতে গেলে তাদেরকে তাঁর নির্দিষ্ট ডাকাত বাহিনী দিয়ে রাতের বেলায় কঠোর নির্যাতন নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া জালসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম ডাকাতি করে নিয়ে আসা। প্রতিবার ইলিশ মৌসুমে প্রতি মাছ ধরার বোট হতে পঞ্চাশ হাজার টাকাকরে চাঁদা আদায় করে থাকে ভুক্তভুগি জেলেরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের মাধ্যমে জানান। জলদস্যু স¤্রাট ইলিয়াছকে কোস্টগার্ড আটক করলেও রহস্যজনক কারণে সেই ছাড়া পেয়ে যায়। তবে গোপন সূত্রে জানাযায় যে, সাগরে না যাওয়ার তার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কোস্টগার্ডকে সেই আন্ডারটেকিং দিয়েছে।
পতেঙ্গা থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন যে গাভী ইলিয়াছকে আমরা একাধিকবার আটক করে আদালতে পাঠালেও সেই টাকার জোড়ে আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় এসে সেই মাদক বিক্রির পেশায় জড়িয়ে পরে। পুলিশ প্রশাসন আরও বলেন, মাদক এবং জঙ্গির বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স অবস্থান রয়েছে। কোন অপশক্তি এ বিষয়ে আমাদের রুখতে পারবে না।
অন্যদিকে জানাযায় যে, ফাড়ের ব্যবসার আড়ালে তার ডাকাত বাহিনীর মাধ্যমে জাহাজ থেকে চোরা মালের পাশাপাশি ইয়াবা চালান খালাশ করা হয়। গাভী ইলিয়াছের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকার পরও সেই প্রকাশ তার অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পূর্ণ প্রশাসনের টিম দিয়ে যদি তার অপকর্মসমূহ তদন্ত করা যায় তাহলে আসল রহস্য উদঘাটিত হবে। এলাকার একাধিক লোকজন বলেন, ইয়াবা ও চোরাতেলের মাধ্যমে সে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে তার সম্পদের বিবরণ চেয়ে দূনীর্তি দমন কমিশন এগিয়ে আসলে অবৈধ সম্পদের পরিমান উদঘাটিত হবে।
চট্টগ্রামে তেলে তৈলাক্ত গাভী ইলিয়াছ ও তার সিন্ডিকেট
পূর্ববর্তী পোস্ট