
নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘আমি, তুমি-আমরা’- এভাবেই সাজানো হয়েছে সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসার নিয়োগ বোর্ডের অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষের মনোনীত প্রার্থী, নিয়োগ বোর্ডে নেওয়ার অভিযোগ হয়েছে। সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসার নিয়োগ বোর্ডে নীতিমালা বহির্ভূত স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে ১৪টি পদে পাতানো নিয়োগ বোর্ড করার অভিযোগ। সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসার নিয়োগ বোর্ডে যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হলে বড়ো ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ৭ নভেম্বর শুক্রবার নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নিয়োগ পরীক্ষার আগেই ইতিমধ্যেই স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও মাদ্রাসা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন নিয়োগ পরীক্ষার বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মাদ্রাসার শিক্ষক ও প্রার্থীরা জানান, সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদ প্রায় ১৪ বছর শূন্য আছে। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুফতি আক্তারুজ্জামান নিজে দায়িত্ব পাওয়ার পর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির যোগসাজোসে নিয়োগ বাণিজ্য করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যে কারণে বিধিমালা উপেক্ষা করে নিজ পদে অধিষ্টিত থেকে অধ্যক্ষ পদ বাদে ১৪টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। এমনকি ল্যাব সহকারি পদ আছে ১টি কিন্তু তিনি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ৪ জনের। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুফতি আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের এখানে কোন স্বজনপ্রীতি বা অবৈধ অর্থ লেনদেন হয়নি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আবেদন পত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গত ১৮/০৮/২০২৫ ইং তারিখে, অধ্যক্ষ মহোদয় পরের দিন ১৯/০৮/২০২৫ ইং তারিখে ঐ নিয়োগ পরীক্ষার ১জন প্রার্থী ও ১জন প্রার্থীর পিতাকে আবেদন পত্র দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন এবং তাদের দিয়ে অফিসিয়াল যাবতীয় কাজ করাচ্ছেন। সেজন্য অন্যান্য প্রার্থীরা আপত্তি তুলেছে। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ মহোদয় নিজে আবেদন পত্র নিজ ব্যাগে করে নিজ বাড়িসহ অন্যাত্র নিয়ে যায়,(যাহার ছবি প্রার্থীদের কাছে সংরক্ষিত আছে) বলে জানা গেছে। আলিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ও আব্দুল করিম এর সন্তানদেরকে অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে চাকুরীতে নেবে বলেছেন এবং আনিছুর রহমানকেও নেবে বলে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও অধ্যক্ষ মহোদয় উপাধ্যক্ষ পদে ১জন প্রার্থীকে এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১জন প্রার্থীর নিকট মোটা অংকের অর্থ নিয়েছেন বলে প্রার্থীরা জানতে পেরেছেন।
গত ১৩/০৮/২০২৫ ইং তারিখে একজন প্রার্থী অধ্যক্ষের সাথে সৌজন্য মূলক সাক্ষাত করতে গেলে তাকে উল্টো তিনি পুলিশ দিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে হুমকি দেন। পরবর্তীতে গত ২৬/০৮/২০২৫ ইং তারিখে অধ্যক্ষ মহোদয় একজন ব্যাক্তিকে দিয়ে মাহমুদুল হাসান নামক একজন শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে আসেন এবং একটি কক্ষে আটকে রেখে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পরে তিনি ১৭/০৯/২০২৫ ইং তারিখে ১ জন প্রার্থীর বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি দিয়েছেন। যেন উক্ত নিয়োগ সর্ম্পকে কোন কিছু না বলে। আগামী ০৭/১১/২০২৫ ইং তারিখ শুক্রবার অধ্যক্ষ মহোদয় তড়িঘড়ি করে নিয়োগ মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষা হবে বলে প্রার্থীদের কাছে ইন্টারভিউ কার্ড পাঠিয়েছেন। নীতিমালা বহির্ভূত স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে ১৪টি পদে পাতানো নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করে নিয়োগ পরীক্ষা স্থাগিত করে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে বাদ দিয়ে একজন নিরপেক্ষ ও সৎ ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করার মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

