
বিএম আলাউদ্দীন, আশাশুনি থেকে:
১২ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সরকারি রেজিঃ বন্দোবস্ত পাওয়া জমি দখলে নিতে পারছে খাবন না আশাশুনির এক ভূমিহীন পরিবার। জবর দখলকারীর হাত থেকে বন্দোবস্ত জমি উদ্ধারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও ইউনিয়ন সহকারী তহশীলদার আবু বকর সিদ্দিকের ষড়যন্ত্রে বিগত পাঁচ মাস ধরে শুধু হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভূমিহীন পরিবারটি। ঘটনাটি ঘটেছে আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়নের মহিষকুড় গ্রামে।
রফিকুল গাজীর ছেলে ভুক্তভোগী আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী সাফিনা আক্তার জানান, ৭৯২/২০০৯-১০ নং বন্দোবস্ত মামলায় ২৬/১০/২০১০ তারিখে ৩৩৩৫ নং রেজিঃ কবুলিয়াত দলিলের মাধ্যমে গাজীপুর মৌজায় জেএল ১১৬, এসএ- ১, ৩৮৫/৩৮৬ দাগে ৫০ শতক জমি ভূমিহীন হিসেবে বন্দোবস্ত পেয়েছিলাম। এরপর ভূমি অফিসের ৭১৬/(রী-ও)/২০১১-১২ নং নামপত্তন কেসের মাধ্যমে ৩০৯ নং খারিজ খতিয়ানে নিজেদের নামে রেকর্ড পেয়েছি। কিন্তু এই কাগজ বয়ে বেড়ানো ছাড়া জমি পাইনি। অবৈধ দখলদার মহিষকুড় গ্রামের হৃদয় গাইনের ছেলে দিলিপ কুমার গাইন বিভিন্ন সময়ে তহশীলদার ও স্থানীয় মাস্তান বাহিনীর সাহায্য নিয়ে উক্ত জমিতে আমাকে উঠতে দেয়নি। সেই ২০১০ সাল থেকে সব প্রতিকূলতার মধ্যেও জমির দখল পেতে বিভিন্ন অফিস সহ নেতাকর্মীদের সাথে কাছে ধর্ণা দিয়ে চলেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রæয়ারি উক্ত সম্পত্তির দখল পেতে অবৈধ দখলদার দিলীপ কুমার গাইন ক বিবাদী করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত আবেদন করি। ওই তারিখেই ৩৭৮ নং স্মারকে ইউনিয়ন তহশীলদারকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। সেই থেকে তহশীলদার আবু বকর সিদ্দিকের হয়রানি শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খরচের কথা বলে তিনি শুধু টাকা নিয়েছেন। কিন্তু জমিতে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেনি। গত কয়েকদিন আগে এসিল্যাÐ সাহেব আমার সামনে বিষয়টি মিটমাট করে দেওয়ার কথা বললেও তিনি তা করেননি। বরং তিনি দিলীপের কাছে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমাকে হয়রানি করেই যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় আমিন মোস্তাফিজুর রহমান নালিশি সম্পত্তি মাপজরিফ করেন। তিনি বলেন আবুল কালামের ৫০ শতক জমি জরিপ করে পাওয়া গেছে। দিলীপের অংশে ১ একর ২৫ শতক সরকারি জমি রয়েছে। সে কিভাবে এটা ভোগ করছেন তার কাগজ পত্র দেখাননি। শ্রীউলা ইউনিয়নের তহশীলদারের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কলিমাখালী গ্রামের আক্কাজ আলীর ছেলে আয়ুব সরদার এস এ- ৯১/১ খতিয়ানে খারিজ সূত্রে মাত্র ৫ শতক জমির মালিক। এই জমি ২৯/১১/২০০৭ ইং তারিখে ২৮৫৮ নং রেজিঃ কোবালা খরিদ করেন একই গ্রামের মৃত নুর আলীর ছেলে আজিজুর রহমান। কিন্তু ভোগদখলে থাকা উক্ত সম্পত্তি প্রিন্ট পর্চায় সরকারি খাস খতিয়ানে ভুলবশত অন্তর্ভুক্ত হয়। উক্ত সম্পত্তি ডিসিআরের আবেদন করেছেন আজিজুর রহমান। কিন্তু তহশীলদার প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাকে ডিসিআর না দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আজিজুর রহমান।
এ ব্যাপারে শ্রীউলা ইউনিয়ন তহশীলদার আবু বকর সিদ্দিকের ব্যবহৃত ০১৭১২৫৪৬৩৫৪ নং মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বন্দোবস্ত পাওয়া জমি দখলে নিতে এবং ভূমিহীনদের অহেতুক হয়রানি করা তহশীলদারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।