
জাতীয় ডেস্ক:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুপক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে প্রথমে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর রাত ৩টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনাকে হামলা দাবি করে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র আল সামাদ শান্ত ও আইন বিভাগের মাহামুদুল হাসান তমাল গ্রুপের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আতাউর রাফি ও বাংলা বিভাগের তাহমিদ হাসান নাভিদ গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলে আসছিলে। এর মধ্যে শান্ত ও তমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাতের অনুসারী এবং রাফি ও নাভিদ ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ মোল্লার অনুসারী। সিফাত ও রিয়াজের মধ্যে কিছুদিন আগে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে গুরুতর আহত হয়ে সিফাত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দীর্ঘদিন। সিফাত ক্যাম্পাসে ফিরে পুনরায় তার সমর্থকদের দিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করায় সংঘর্ষ বাধে রিয়াজ মোল্লার অনুসারী রাফি-নাভিদ গ্রুপের সঙ্গে। রাতভর চার দফায় সংঘর্ষে মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাত, তাহমিদ জামান নাভিদ, রুম্মান হোসেন, আতাউর রাফি, মাহামুদুল হাসান তমাল ও গণিত বিভাগের আবিদ হোসেন আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রাফি বলেন, ‘২/১ দিন আগে রুপাতলিতে বহিরাগতদের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছিল আমাদের। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এটা মীমাংসার কথা ছিল। তবে বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাত ১০টার দিকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। দফায় দফায় হামলায় আমরা তিনজন আহত হয়েছি। এ হামলায় বহিরাগতদের সঙ্গে যোগ দেয় আল সামাদ শান্ত ও মাহামুদুল হাসান তমালের বাহিনী। শান্তর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।’
ছাত্রলীগ নেতা হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আল সামাদ শান্তর নেতৃত্বে বহিরাগতরা নাভিদ, রুম্মান ও আতাউরের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা তিনজনই আহত হয়েছেন। আমরা শান্তর বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছি।’ এ বিষয়ে জানতে আল সামাদ শান্তর মোবাইল ফোনে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর খোরশেদ আলম বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সপ্তম ও অষ্টম ব্যাচের ছাত্রদের দুই গ্রুপের মারামারি হয়েছে। তাদের বলে দিয়েছি, ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই পক্ষের কয়েক দফা সংঘর্ষের খবর শুনেছি। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা রয়েছে।’