
আকরামুল ইসলাম:
করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দরে। বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানী কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চললেও ব্যবসায়ীরা রয়েছেন আতঙ্কে। আমদানিকারকদের মতে, বাংলাদেশ সরকার ভারতে যাতায়াত ও ইমপোর্ট পারমিশান (আইপি) বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা যেমন নতুন কোন পণ্য আমদানীর আইপি করতে পারছে না তেমনি পণ্য আমদানী-রপ্তানীর জন্য ভারতে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে, আমদানি-রপ্তানীতে ধ্বস নেমে যাবে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভোমরা বন্দরে। বেকার হয়ে পড়বে ৩০ হাজার শ্রমিক।
ব্যবসায়ীদের সংগঠণ ভোমরা সিন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে বন্দর দিয়ে এখন কম ট্রাক প্রবেশ করছে। আমদানিকৃত পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাকের সঙ্গে একজন চালক ও হেলপার আসছে। তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস রয়েছে কিনা সেটি ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যও কিছুটা সময় প্রয়োজন। সময় পার হওয়ার কারণে পূর্বের থেকে বর্তমানে কম পণ্যবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশ করছে। এর প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়ীদের উপর।
অন্যদিকে, ভোমরার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠাণ এমএণ্ডএস ট্রেডিংয়ের সত্ত্বাধিকারী এএসএম মাকসুদ খান বলেন, কাঁচামাল পণ্য আমদানীর জন্য ভারতে যেতে পারছি না। এখন কোন পণ্য আমদানি করতে গেলে ভারত থেকে ব্যবসায়ীরা আমাকে কি পণ্য দিবে সেটি না দেখেই আমাকে নিতে হবে। পণ্যটি ভালো না খারাপ সেটি দেখার সুযোগ ব্যবসায়ীরা পাচ্ছে না। মূল কারণ, করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশী যাত্রীদের ভারতে যাতায়াত বন্ধ ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। এর প্রভাব ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীদের উপর পড়তে শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী এক মাস ভারতে যাতায়াত বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিতে শুরু করেছে। তাছাড়া ফেব্রুয়ারী মাসে যে সকল ব্যবসায়ীদের আইপি (ইমপোর্ট পারমিশান) করা তারাই এলসি করতে পারছেন। নতুন কোন ব্যবসায়ী আইপি করতে পারছে না। বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে পণ্য আমদানির আইপি বন্ধ ঘোষনা করেছে। পণ্য আমদানি কম হওয়ায় বন্দর সংশ্লিষ্ট ৩০ হাজার কর্মচারি, শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে।
তবে বর্তমান পর্যন্ত ভোমরা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে ভোমরা বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শেখ এনাম হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ভোমরা বন্দরের ব্যবসায়িকভাবে এখনো তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। তবে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ হওয়ায় সেটির উপর প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারী মাসে ভোমরা বন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্যের উপর রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭১ কোটি ৬ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৮ টাকা। চলতি মাসের ১৫ মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫২ কোটি ৭৩ লাখ ৯২ হাজার ৮২৬ টাকা।
ইমপোর্ট পারমিশান (আইপি) বন্ধের প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন করে যেহেতু ব্যবসায়ীরা আইপি করতে পারছে না সেহেতু বন্দরে আমদানি-রপ্তানীতে ধ্বস নেমে যাবে। বেকার হয়ে পড়বে বন্দরের ৩০ হাজার কর্মচারী শ্রমিকরা।