জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা): আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়ন পরিষদে শালিসী বৈঠকে হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
শোভনালী ইউনিয়নের কামালকাটি গ্রামের মৃত নিতাই চন্দ্র বিশ্বাসের ৩ পুত্র তপন কুমার বিশ্বাস (৬৫), সুদেব বিশ্বাস ও দ্বীনবন্ধু বিশ্বাসের মধ্যে বিলান ৫০ শতক জমি নিয়ে প্রায় দু’বছর দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এব্যাপারে দ্বীনবন্ধু বিশ্বাস থানায় অভিযোগ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বসাবসিতে ২২ শতক জমি দ্বীনবন্ধুকে ফেরত দেন অপর দু’ভাই। বাকী ২৮ শতক জমি ফেরত পেতে চেষ্টা চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বীনবন্ধু শোভনালী ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২৩ অক্টোবর গ্রাম আদালতে শালিস বৈঠক হয়। এদিন আংশিক শুনানী শেষে পরবর্তী দিন ধার্য হয় ৩০ অক্টোবর। এদিন দুপক্ষের মধ্যে কোন প্রকার হাতাহাতি বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ৩০ অক্টোবর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শালিসী বৈঠক বসে। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইউপি সদস্য উদয় কান্তি বাছাড় দুপক্ষের কাগজপত্র দেখে শুনানি করেন। শুনানি চলাকালে তপন কুমার বিশ্বাস উত্তেজিত হয়ে কথাবার্তা বলছিল। তখন মেম্বার তাকে গ্রাম আদালতে শান্ত হয়ে কথা বলতে পরামর্শ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি শান্ত হননি, বরং ছোট ভাইকে কড়া ভাষায় কথা বলা ও হুমকী দিতে থাকেন। কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে চেয়ারে বসে পড়েন এবং স্ট্রোক করে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহের লক্ষ্যে দু’ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির অভিযোগসহ রঙ লাগিয়ে মৃত্যুর জন্য প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালান হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে গ্রাম আদালতে শুনানী গ্রহনকারী মেম্বার উদয় কান্তি বাছাড় জানান, বাদী বিবাদী পক্ষ দু’পাশে ৬/৭ হাত দূরে বসে কথা বলেন। তাদের থেকে কাগজপত্র নিয়ে পর্যালোচনা কালে তপন বিশ্বাস খুবই উত্তেজিত হয়ে কথা বলছিলেন। দ্বীনবন্ধু কোন কথার প্রতি উত্তর করেনি। কোন তর্কবিতর্ক ও গোলযোগ হয়নি। আগে থেকে তপনের হার্টে ব্লক ছিল। উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে বলতে তিনি চেয়ারে বসে পড়েন এবং নিস্তব্দ হয়ে পড়েন। সাথে সাথে স্থানীয় চিকিৎসককে ডেকে আনা হলে চিকিৎসক তপনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান।
শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান মাওঃ আবু বক্কর সিদ্দিব জানান, ৩০ তারিখে গ্রাম আদালতে শুনানি কালে দুপক্ষের মধ্যে কোন উত্তেজনা হয়নি। বরং তপন নিজেই উত্তেজিত হয়ে ছোট ভাইকে কটু কথা বলে এবং বাড়ি গেলে হাটু ভেঙ্গে দেবে বলে হুমকী দেয়। এক পর্যায়ে স্টোকে আক্রান্ত হয়ে চেয়ারে বসে পড়ে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

