
জাতীয় ডেস্ক:
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) গোলাম ইয়াজদানীকে মারধরে ১১ ঠিকাদার জড়িত ছিলেন। বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না পাওয়া এবং জামানতের টাকা দ্রুত ফেরত না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।
ঘটনার সময় পাশের রুমে থাকা সহকর্মীদের কেউ তাকে রক্ষায় এগিয়ে যাননি। বুধবার সন্ধ্যায় চসিকে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে এসব বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়। প্রতিবেদনে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১১ ঠিকাদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন এসজে ট্রেডার্সের সাহাব উদ্দিন, মেসার্স বাংলাদেশ ট্রেডার্সের সঞ্জয় ভৌমিক কংকন, মাসুদ এন্টারপ্রাইজের মো. ফেরদৌস, মেসার্স জয় এন্টারপ্রাইজের সুভাষ মজুমদার, মেসার্স খান করপোরেশনের হাবিব উল্লাহ খান, মেসার্স নাজিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের নাজিম উদ্দিন, মেসার্স রাকিব এন্টারপ্রাইজের নাজমুল হোসেন ফিরোজ, ইফতেখার অ্যান্ড ব্রাদার্সের মো. ইউসুফ, মেসার্স জ্যোতি ও হ্যাপি এন্টারপ্রাইজের আশীষ কুমার দে ও হ্যাপি দে এবং মেসার্স তানজিল এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর। এ ১১ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চসিক কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ শামসুল তাবরীজ তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। টেন্ডার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে চারটি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হলো-প্রকল্প গ্রহণ, প্রাক্কলন ও টেন্ডার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে মেয়রের অনুমোদন অপরিহার্য করা।
এক্ষেত্রে প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণসহ অন্যসব কার্যক্রমে আবশ্যিকভাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা প্রয়োজন। টেন্ডারসংক্রান্ত বিষয় চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কঠোরভাবে মনিটর করা। নিরাপত্তা বিষয়ে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে-বহিরাগতদের নাম, মোবাইল ফোন নম্বর এবং দপ্তরে প্রবেশের কারণ লিপিবদ্ধ করা; প্রতিটি ফ্লোরে কমপক্ষে দুইজন করে নিরাপত্তাকর্মী রাখা; পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও সিসিটিভি ফুটেজ স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বাড়ানো; সিটি করপোরেশনে দর্শনার্থীদের প্রবেশের সময়সীমা নির্ধারণ করা; ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বিকাল ৪টার পর দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা। ভবনে প্রবেশে মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নেওয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করা।
২৯ জানুয়ারি চসিকের টাইগারপাস অস্থায়ী কার্যালয়ের চতুর্থ তলার ৪১০ নম্বর কক্ষে পিডি গোলাম ইয়াজদানীকে মারধর এবং তার টেবিল ও নামফল ভাঙচুর করেন ঠিকাদাররা। এ ঘটনায় ওই রাতেই চসিকের নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১০ ঠিকাদারের নাম উল্লেখ করে খুলশী থানায় মামলা করেন। পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।