
জাতীয় ডেস্ক:
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন ও আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নো হ্যামিলার্স পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টিউলিপ বাগান পরিদর্শন করেন।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টিউলিপ বাগান পরিদর্শন করেছেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্টরুপ পিটারসেন ও আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নো হ্যামিলার্স। তারা টিউলিপ চাষিদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তারা ইফাদ ও ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির সহ-অর্থায়নে রুরাল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ট্রান্সফরমেশন প্রকল্পের আওতায় টিউলিপ চাষ করছেন বলে মঙ্গলবার ইফাদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সাধারণত শীতল আবহাওয়ায় জন্মানো এই টিউলিপের বেশ চাহিদা রয়েছে রাজধানী ঢাকায়। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অংশীদার সংস্থা, ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন দ্বারা বাস্তবায়িত একটি ভ্যালু চেইন উন্নয়ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০২১ সালে আটজন কৃষককে টিউলিপ চাষ ও বাজারজাত করার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সফল পাইলটের পর, তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্জিপাড়া গ্রামের ২০ জন কৃষকের মধ্যে এই উদ্যোগ সম্প্রসারিত হয়েছে, যারা এ বছর প্রায় এক লাখ টিউলিপ ফুল উৎপাদন করছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন বলেন, আমি এখানে এসে সত্যিই খুশি এবং আমি গর্বিত যে ডেনিশ সরকার ইফাদের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে এই তরুণ নারী কৃষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করেছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে এই বাগানে আরো টিউলিপ প্রস্ফুটিত দেখব, যা কিনা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য অতিরিক্ত জীবিকার সুযোগ তৈরি করবে।
কৃষকদের উৎপাদিত এই টিউলিপ তোড়ার বেশির ভাগই রাজধানীতে পরিবহন করা হয় এবং কিছু স্থানীয়ভাবেও বিক্রি হয়। টিউলিপ বাংলাদেশে নতুন ফুল হওয়ায় এর বাগানগুলো স্থানীয় পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে এবং স্থানীয়দের নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি করছে।
আর্নো হ্যামেলিয়ার্স বলেন, একজন ডাচ ব্যক্তি হিসেবে টিউলিপ আমার কাছে বিশেষ কিছু। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কার্যকর প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডাচ জলবায়ুকে অনুকরণের চেষ্টা করে টিউলিপের উৎপাদন দেখে আমি আনন্দিত। এই নারীরা আবারও প্রমাণ করেছেন যে শুধু প্রশিক্ষণ, আর্থিক পরিষেবায় অভিগম্যতা এবং বাজার সংযোগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সহায়তা পেলেই একটি নতুন পণ্য এবং সেটির একটি ভ্যালু চেইন তৈরি করা যেতে পারে।
আনোয়ারা নামে এক কৃষক বলেন, আমি গবাদি পশু পালন ও কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। গত বছর আমি টিউলিপ চাষ শুরু করেছি। মাত্র ৪৫ দিনে ৬৫ হাজার টাকা আয় করেছি। সেই টাকা দিয়ে আরো গবাদি পশু কিনেছি। এই বছর আমি টিউলিপ থেকে আরো বেশি আয়ের আশা করছি। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যটকরাও এই টিউলিপ বাগানগুলো পরিদর্শনে আগ্রহী, যা কিনা বাড়তি আয়ের সুযোগ নিয়ে আসবে।