
সাথী ফসল মধুর উৎপাদন ৫৩ হাজার কেজি
আহাদুর রহমান জনি :
লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে সাতক্ষীরায় সরিষার উৎপাদন। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকা, নিবিড় পর্যবেক্ষন ও যথাসময়ে বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়ার কারণেই এ বছর সরিষার উৎপাদন বেশি। বাড়তি উদ্যোগ হিসেবে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলার মধু খামারিদের সুযোগ করে দেয়ার কারণে দুই হাজারটন সরিষার উৎপাদন বেড়েছে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর সরিষার উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার ৮৩০টন যা বিগত বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৭২৫টন বেশি। গতবছর জেলায় ১২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিলো। এ বছর জেলা জুড়ে ১৩ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এক হাজার ৬৯০ হেক্টর বেশি। সাতক্ষীরায় এবার বারি ১৪, বিনা ২৩, বারি ১৮, বিনা ১১ ও দেশি জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বারি ১৪ জাতের সরিষার সরকারি প্রণোদনার আওতায় দেওয়া হয়েছে। এই প্রণোদনা পেয়েছেন ১৪ হাজার ৩০০জন কৃষক। প্রণোদনার আওতায় প্রত্যেক কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য সরিষা বীজ ১কেজি, ডিএপি ১০ কেজি, এমওপি ১০ কেজি করে পেয়েছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা ও পাশ্ববর্তী জেলা থেকে মৌমাছির খামারিদের সরিষা ক্ষেতে পাশে খামার স্থাপনের সুযোগ দেয়ার কারণে মধু ও সরিষার উৎপাদন ঈর্ষনীয়। জেলাজুড়ে প্রায় ১০০ খামারি তাদের মৌমাছির বাক্স স্থাপনের সুযোগ পেয়েছে। একারণে সরিষা ফুলের মধু উৎপাদন হয়েছে ৫৩ হাজার ৫১০ কেজি। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের প্রণোদনার সুষ্ঠ ও সুষম বন্টন, নিবিড় পর্যবেক্ষন ও মধু উৎপাদন কারীদের সুযোগ করে দেয়ার কারণে সাতক্ষীরায় সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। ভোজ্যতেলের আমদানি কমানোর লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবেই দেশে সরিষার আবাদ বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
সাতক্ষীরা সদরের রাজনগর এলাকার সরিষা চাষী মোনতাজুল ইসলাম জানান, ‘এবছর সরিষার ফলন ভাল হয়েছে। কৃষি অফিসের স্যাররা নিয়মিত খোজখবর নিয়েছে। সমস্যায় পড়লে সমাধানও করেছে। তাই ফলন বেশ ভাল।’
প্রণোদনা পাওয়া কৃষক আবুল হোসেন জানান, ‘আর্থিক সংকটে এবার মনে করেছিলাম সরিষার চাষ করতে পারবো না। কিন্তু প্রণোদনার বীজ ও সার পেয়ে সরিষার চাষ করি। ভালো ফলন পেয়েছি। আমাদের মতো কৃষকের পাশে থাকার জন্য সরকারকে এ জন্য ধন্যবাদ জানাই।’
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: জামাল উদ্দনি জানান, ‘চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় সরিষা উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার ৮৩০টন যা বিগত বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৭২৫টন বেশি। এবারে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে গত বছরের চেয়ে এবার সরিষা চাষ ও উৎপাদন বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি মৌমাছি খামারিদের সুযোগ করে দেয়ায় মধুর উৎপাদনও বেড়েছে। আমরা সব সময় কৃষকদের পাশেই আছি। ’