
আতিয়ার রহমান, মণিরামপুর থেকে: রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি থেকে এক মাদরাসা ছাত্রীকে অপহরণ করে পালানোর সময় মণিরামপুর থেকে কথিত প্রেমিকসহ ছয় জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে খেদাপাড়া ফাঁড়ির টহল পুলিশ পুলেরহাট-রাজগঞ্জ সড়কের পলাশী মোড় থেকে তাদের আটক করে।
উদ্ধার হওয়া মাদরাসা ছাত্রী ও তার কথিত প্রেমিক প্রেম কুমার আকাশের বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামে। আকাশ ওই গ্রামের অখিল বসুর ছেলে। মেয়েটি স্থানীয় ইউপি সদস্যর মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।
তাদের সাথে থাকা বাকি পাঁচ তরুনের বাড়ি মণিরামপুরের রাজগঞ্জ অঞ্চলে। ফেসবুকে এই পাঁচ যুবকের সাথে আকাশের পরিচয়।
মেয়েটি মুসলিম হলেও পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় প্রেম কুমার আকাশের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই নিয়ে এলাকায় একাধিকবার শালিস হয়েছে। স¤প্রতি মেয়েটির পিতা অন্য ছেলের সাথে তার বিয়ে ঠিক করে। উপায় না পেয়ে আকাশ তাকে নিয়ে মণিরামপুরে পালিয়ে আসে, এমনটি পুলিশকে জানিয়েছে সে।
তবে মেয়েটির পিতার দাবি, রোববার রাত ১১ টার দিকে প্রাকৃতিক ডাকে সাঁড়া দিতে ঘরের বাইরে এলে আকাশ ও তার দলবল তার মেয়েকে অপহরণ করে।
আটক অপর পাঁচ তরুণ হচ্ছে, মণিরামপুরের হেলাঞ্চি গ্রামের সাধন পালের ছেলে সৌরভ পাল, চন্ডিপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান, আব্দুল মান্নানের ছেলে রাব্বি হোসেন, আহসান হাবিবের ছেলে অন্তু হোসেন ও আব্দুল আলিমের ছেলে সোহান।
আটক মণিরামপুরের পাঁচ তরুণ জানায়, আকাশের সাথে তাদের ফেসবুকে বন্ধুত্ব। আকাশ ওই মেয়েটির বিষয়ে তাদের সব জানিয়ে সহায়তা চায়। পরে তারা রাজগঞ্জ বাজার থেকে মাইক্রোবাস ভাড়া করে আকাশ ও মেয়েটিকে আনতে রাজবাড়ি জেলায় যায়।
মাইক্রোবাস চালক মনিরুজ্জামান নয়ন জানান, বন্ধু ও তার স্ত্রীকে রাজবাড়ি থেকে মণিরামপুরে আনতে অন্তু নামের ছেলেটি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় তাকে ভাড়া করে। রোববার রাত সাতটার দিকে তারা রাজগঞ্জ স্ট্যান্ড থেকে রওনা হয়। গাড়িটি তাদের আবার রাজগঞ্জে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। ফেরার পথে রাত সাড়ে তিনটার দিকে পলাশী মোড়ে পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।
খেদাপাড়া ক্যাম্পের আইসি এসআই গোলাম বসুল বলেন, নিয়মিত রাতে ডিউটির অংশ হিসেবে রোববার দিবাগত ভোর রাতের দিকে উপজেলার পলাশী মোড়ে মাইক্রোবাসটির গতি রোধ করে ভিতরে একটি মেয়ে ও পাঁচ-সাতজন ছেলেকে পাওয়া যায়। পরিচয় জানতে চাইলে তারা ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেয়। সন্দেহ হওয়ায় অধিকতর জিজ্ঞাসার ফলে তারা ঘটনা খুলে বলে। ওই সময় তাদের গ্রেফতার করে ক্যাম্পে নেওয়া হয়। পরে সোমবার দুপুরে তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়।
আইসি রসুল বলেন, এই ঘটনায় বালিয়াকান্দি থানায় একটি অপহরণ মামলা হয়েছে। সেখানকার পুলিশ আসলে সবাইকে তাদের হাতে সোপর্দ করা হবে।