
নিজস্ব প্রতিবেদক: অস্ত্রধারী ও ডজন মামলার আসামী রবি এখন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সোর্স। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারী) রবি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ছিচকে চোর নজরুল ইসলাম নজুকে ডিবি পুলিশের জালে ভরে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যার সময় জেলা গোয়েন্দা শাখার দু’জন কর্মকর্তা মহাজনপুর গ্রামের ছোট’র দোকানে অবস্থান নেয়। আশ-পাশে অবস্থান নেয় আইতলা গ্রামের অহেদ আলীর পুত্র রবিউল ইসলাম শান্ত ওরফে রবি ও তার ছিনতাই দস্যুবৃত্তি সিন্ডিকেটের ৪/৫ জন সদস্য। আইতলা গ্রামের সরু সরদারের পুত্র নজরুল ইসলাম নজু মহাজনপুর গ্রামের খালেকের রাইস মিল মোড়ে আসলে রবি ডিবি পুলিশের টিমকে ইঙ্গিত দেয়। পরে ডিবি পুলিশের দলটি নজুকে জেলা কার্যালয়ে নিয়ে আসে। নজু এলাকায় ছিচকে চোর হিসেবে পরিচিত।
যে কারনে নজু ডিবি পুলিশের জালে :
সাম্প্রতিককালে রবিউল ইসলাম শান্ত ওরফে রবি ছিনতাই ও দস্যুবৃত্তি কাজে বেপরোয়া হয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে দৈনিক সাতনদীসহ একাধি পত্রিকায় সিরিজ খবর প্রকাশ পায়। তার বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় দস্যুবৃত্তির ঘটনায় মামলাও রেকর্ড হয়। ওই সময় আশাশুনি থানা পুলিশ নজুকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করে দফায় দফায় রবিকে ধরার জন্য হানা দেয়। তার সিন্ডিকেটের একজনকে ধরেও ফেলে। পরে চাপে পড়ে রবি আদালতে আত্মসমর্পন করে। দীর্ঘদিন হাজত বাস করে রবি আবারও ছিনতাই কাজে কাড়ি কাড়ি টাকা কামাচ্ছে। এই নজুর মাথায় রবি পিস্তল ধরেছিল। এ ঘটনাও নজু মিডিয়ায় ফাঁস করে দেয়। নজু স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদী কন্ঠও বটে। নজুকে সাইজ করতে রবি ঘাটে ঘাটে কিছু তুস কুড়োও ছড়িয়েছে।
ডিবি পুলিশের সোর্স কে এই রবি :
রবি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও দস্যু বৃত্তি কাজের সাথে জড়িত। খুলনাতে অপরাধ জগতে থাকাকালিন সে দুটি পিস্তল সংগ্রহ করে। তার শ্বশ্বর খুলনার জামাত আলী ও অপরাধ জগতের হোতা। তার বিরুদ্ধে আছে ডজন মামলা। অস্ত্র উদ্ধারের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে সম্প্রতি আটক করলেও প্রভাবশালীদের তদ্বিরে বেরিয়ে আসে। পুলিশের মধ্যে জনৈক মুক্ত দারোগা তার খুঁটি। মুক্ত দারোগা সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা বিভাগে থাকাকালিন রবির সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। সে সময় রবির ইঙ্গিতে হার-হামেশাই ডিবির টিম দৌড়-ঝাপ শুরু করতো। দু’জন প্রভাবশালী কথিত সাংবাদিক কাম রাজনীতিকও রবির শেল্টার দিয়ে আসে। সাতক্ষীরা ও খুলনাতে আছে রবির বিরুদ্ধে ডজনেরও অধিক মামলা। মামলার মধ্যে দস্যু বৃত্তি, চাঁদাবাজি, জাল টাকা, ছিনতাই ও প্রতারণার মত ঘটনা বিদ্যমান।
ছিচকে চোর নজু এখন ডিবি পুলিশের খাঁচায় :
নজরুল ইসলাম নজুকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ আটক করার পর সাতনদী অফিস থেকে এই প্রতিবেদক বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ইন্সপেক্টর মহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি বিষয়টি জানাবেন বলে আশ্বস্থ করেন। পরে অসংখ্যবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। বরং কল ফরোয়াডিং করে রেখে দেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাকে আটকের বিষয়ে বলেন, নজুকে যশোরের একটি বিশেষ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে।