নিজস্ব সংবাদদাতা: ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ হলেও স্বামীর জীবন দশায় স্বামীর ভিটায় ঠাই মেলেনি ২য় স্ত্রীর। ২য় পক্ষের সন্তান হওয়ার অপরাধে পিতার ভিটায় থাকার সৌভাগ্যও হয়নি অসহায় মায়ের দুই পুত্র সন্তানের। এমনকি সন্তানদের পিতার মৃত্যুর পর শেষ বারের মত লাশের মুখ দেখার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন স্ত্রী ও সন্তানরা। আর এমনই ঘটনা ঘটেছে আশাশুনি উপজেলা বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথালী গ্রামে।
আইনে ন্যায় বিচার পেতে ও প্রতিকার চেয়ে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন অসহায় বিধবা স্ত্রী আয়শা খাতুন। অভিযোগ নং ১৪৫৭/২২। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, প্রায় ১২/১৩বছর পূর্বে কুল্যা গ্রামের নওশের গাজীর মেয়ে আয়েশা খাতুনের সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক পাইথালী গ্রামের জৈনিক আব্দুস সাত্তারের সাথে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে ১ম স্ত্রী ও সন্তানদের চাপে স্বামী আব্দুস সাত্তার নিজের ভিটায় ২য় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ২য় স্ত্রী আয়েশা খাতুনকে তার পিত্রালয়ে রেখে সংসার করতো স্বামী আব্দুস সাত্তার। পিত্রালয়ে থাকলেও স্বামীর প্রতি কোন ক্ষোভ বা অভিমান ছিলো না ২য় স্ত্রী আয়েশা খাতুনের। সংসারে কিছুটা অভাব অনাটন থাকলেও ২য় স্ত্রী আয়েশা খাতুন নিয়ে সুখেই ছিলো তারা। দাম্পত্য জীবনে কয়েক বছরের ব্যবধানে তাদের ২টি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। স্বামী আব্দুস সাত্তার ১ম স্ত্রী ও ২য় স্ত্রীর পরিবারে নিয়ম মাওফিক সময় দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ একদিন স্বামী আব্দুস সাত্তার মৃত্যু বরণ করেন। আব্দুস সাত্তারের মৃত্যুর সংবাদ ২য় স্ত্রী আয়েশা ও তার সন্তানদের কাছে গোপন রেখে তড়িঘড়ি করে লাশের দাফন সম্পন্ন করে ১ম স্ত্রী ও তার সন্তানরা। বিষয়টি জানতে পেরে স্বামীর কবর জিয়ারত করতে এবং সন্তানদের পিতার কবর দেখাতে নিয়ে গেলে তাদের প্রতি অমানবিক আচারণ করেন সৎ সন্তান জাহাঙ্গীর হোসেন, আলমগীর হোসেন ও কন্যা নাজমা খাতুন। ভবিষতে স্বামীর ভিটায় গেলে সৎ সন্তানরা আয়েশা সহ তার দুই সন্তানকে খুন, যখম করার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ২য় স্ত্রী অসহায় আয়শা খাতুন। বর্তমানে সন্তানদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে মাঠে ঘাটে কামলা খেটে রোজগার করেন বিধাব স্ত্রী আয়েশা খাতুন। ঘটনা শুনে ও লিখিত অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইয়ানুর রহমান। অভিযোগের ভিত্তিতে বুধহাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র উভয় পক্ষকে ফাঁড়িতে হাজির হতে বললেও মূল অভিযুক্তরা হাজির হননি বলে জানান ভুক্তভোগী আয়েশা খাতুন। তিনি আরও বলেন, স্বামীর মৃত্যুন্তে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেনের নিকট একাধিকবার ধর্ণা দিলেও তিনি মৃত স্বামীর ওয়ারেশ কায়েম সনদে স্বাক্ষর করেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। এমতাবস্থায় সৎ সন্তানদের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পেতে ও আইনে ন্যায় বিচার পেতে সংশ্লিষ্ট প্রসাশনের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন বিধাব অসহায় স্ত্রী আয়েশা খাতুন।