- দায়িত্ব পেলেন কাজী ফিরোজ হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে ১২ কাউন্সিলরের অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় মেয়রের পদ শূণ্য ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত ৪৬.০০.০০০০.০৬৩.২৭.০০৪.২২ (অংশ-১)-১৭৩৩ স্মারকের প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্র বিরোধী নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, পৌরসভার ঠিকাদারী কাজে অংশগ্রহণ, পরিষদ সদস্যগণের অবমূল্যায়ন ও পরিষদ সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করা, পৌরসভার পানি শাখাকে পরিকল্পিতভাবে অকার্যকর করা, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য ঠিকাদারগণের কার্যাদেশ প্রদান না করা, পৌরসভার স্বার্থ হানিকর বিভিন্ন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতক্ষীরা পৌরসভার ১২ (বারো) জন কাউন্সিলরের অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় সরকার তথা স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩৮ (১২) মোতাবেক সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র এর আসনটি সূত্রোস্থ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ হতে শূন্য ঘোষণা করা হয়। এমতাবস্থায়, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ৩৩ (২) ধারা এর বিধানমতে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র-এর শূন্য পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। অপর একটি প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরা পৌরসভার নূতন মেয়রের কার্যভার গ্রহণ করা পর্যন্ত স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ধারা ৪০ (৩) অনুযায়ী প্যানেল মেয়র ১ কাজী ফিরোজ হাসানকে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতাসহ মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাতক্ষীরার পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতিকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ১৫ জুন ২০২২ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ ঘোষণা জানানো হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মেয়রের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৭০১ টাকা পানির বিল মওকুফসহ বিল যথাযথভাবে আদায় না করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়র কর্তৃক এককভাবে মওকুফ করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। ছয় বছরে সাতক্ষীরা পৌরসভার হাটবাজার ইজারা বাবদ ৬৬ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫১ টাকা টাকা বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া ভ্যাট, আয়কর বাবদ ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ৯৭০ টাকা, আদায় ও সরকারি খাতে জমা করা হয়নি। বিদ্যমান বিধিবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ না করে মার্চ ২০১৬ থেকে তদন্তকালীন পর্যন্ত পৌর কর মওকুফ করা হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ৯৪৩ টাকা, ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৭২৬ টাকা মওকুফ করা হয়েছে। অভিযোগগুলো তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩২-এর উপ-ধারা (১) (ঘ) মোতাবেক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে একই আইনের ধারা ৩১ (১) অনুযায়ী সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।