
নিজস্ব প্রতিবেদক: নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বব্য্যাপী আতঙ্কের মধ্যে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ভারত থেকে আসা এক তরুণকে নিয়ে নার্স-চিকিৎসকরা ভয়ে আছেন।
বুধবার ভর্তি হওয়ার পর এখনও কোনো চিকিৎসক তাকে দেখতে যাননি। নার্স-ব্রাদাররা তাকে দূর থেকে স্ট্রেচার করে খাবার দিচ্ছেন।
২১ বছর বয়সী এই তরুণের বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দাতনিখালী গ্রামে।
জানা যায়, ভারত ফেরত তরুণ আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষবর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আসেন।
“বাড়ি যাওয়ার আগে আমি স্বপ্রণোদিত হয়ে হাসপাতালে আসি। আমি নিজে থেকেই দুই সপ্তাহের জন্য আলাদা থাকতে চেয়েছি। আমি যেহেতু বিদেশ থেকে এসেছি, সেহেতু দুই সপ্তাহ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকব। তাতে যদি কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসা নেব। সমস্যা না হলে বাড়িতে ফিরে যাব।”
বাড়িতে তার বাবা-মা ও কিশোরী বোন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি কিনা তা নিশ্চিত না হয়ে বাড়ি গিয়ে পরিবার ও সমাজকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না।”
তবে তিনি কোনো রকম অসুস্থতা অনুভব করছেন না বলে জানিয়েছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক নাজিয়া মুজাহিদ বলেন, “আমি তাকে এখনও দেখিনি। তবে সার্বক্ষণিক খবরাখবর নিচ্ছি। এই তরুণ সুস্থ আছেন। প্রয়োজন হলে অবশ্যই দেখব।
“তবে বেদনার বিষয় হল হাসপাতালের চিকিৎসকসহ পুরো টিম তাকে সেবা দিচ্ছে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে। তাদের নেই কোনো প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা।”
হাসপাতালে গিয়ে ওই তরুণকে নিয়ে চিকিৎসাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা গেছে।
ব্রাদার নারদচন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, “ওই তরুণকে আমরা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে খাবার সরবরাহ করছি। তবে সবাই অত্যন্ত ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।”
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ দিনে সাতক্ষীরায় ৮ হাজার ৮৬৮ জন বিদেশ থেকে এসেছেন। তাদের বেশির ভাগ এসেছেন ভারত থেকে। তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
করোনাভাইরাস অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন।
ইতোমধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে প্রায় সব বিনোদনকেন্দ্র, জাদুঘর ইত্যাদি। সারাদেশে সব প্রেক্ষাগৃহ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও বন্ধ হয়ে গেছে।
মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে সারা দুনিয়ায় আড়াই লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১০ হাজারের বেশি।
করোনাভাইরাস বিশ্বকে অর্থনৈতিক মন্দার দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।