
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন (৩৩ বিজিবি) এর দায়িত্বাধীন এলাকায় সীমান্ত অপরাধ রোধকল্পে মতবিনিময় ও জনসচেতনতা মূলক সভা আয়োজন করেছে বিজিবি। ১১ মে সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন (৩৩ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ আশরাফুল হক, পিবিজিএম, পিএসসি, জি অধীনস্থ কাকডাঙ্গা বিওপিতে দায়িত্বপূর্ণ তলুইগাছা, হিজলদী, কাকডাঙ্গা ও মাদরা এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনসাধারনের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। উক্ত মতবিনিময় সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যথাক্রমে কুশখালী, বাঁশদাও ও কেড়াগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সীমান্তবর্তী জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন। এ সময়ে অধিনায়ক সীমান্তে চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার, মাদক ও মানব পাচার, অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমসহ বিভিন্ন সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উপস্থিত সকলকে আহবান জানান। এছাড়াও অধিনায়ক বলেন ‘‘একটি মৃত্যু একটি পরিবারের সারা জীবনের কান্না”। বর্তমান সময়ে বিজিবি-বিএসএফ সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। সীমান্তে বল প্রয়োগ, গোলাগুলি হওয়ার আশঙ্কা আছে। বাংলাদেশী নাগরিক কর্তৃক অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করলে বিএসএফ কর্তৃক জীবননাশের ঝুঁকি রয়েছে। এ লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ও যে কোন ধরণের দূর্ঘটনা রোধকল্পে সীমান্তবর্তী জনসাধারণ কর্তৃক অবৈধভাবে সীমান্ত অনুপ্রবেশ/অতিক্রম, চোরাচালান, মাদক ও মানব পাচার এবং সীমান্তে অপরাধমূলক কার্যক্রমে না জড়ানোর বিষয়ে চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের মাধ্যমে এলাকার জনসাধারণকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়াও তিনি বলেন সাম্প্রতিককালে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সীমান্ত দিয়ে প্রতিপক্ষ বিএসএফ যাতে কোন ব্যক্তিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পুশ-ইন করতে না পারে সে ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিগণের মাধ্যমে এলাকার জনসাধারনকে সচেতন ও সজাগ থাকার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন সীমান্তবর্তী জনগণকে জানাতে হবে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা যাবে না। সন্ধ্যার পরে সীমান্তে অহেতুক ঘোরাঘুরি করা যাবে না। সীমান্তে সন্ধ্যার পরে ঘোরাঘুরি করলে বিজিবি কর্তৃক আটক করা হবে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। যে সকল বাংলাদেশী নাগরিকদের সীমান্তে চাষাবাদের জমি রয়েছে, তাদেরকে দিনের আলোয় চাষাবাদের কার্যক্রম শেষ করে সীমান্ত এলাকা হতে ফেরত আসার জন্য জনপ্রতিনিধিগণের মাধ্যমে এলাকার জনসাধারনকে প্রেষণা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। সীমান্তে কৃষিকাজ করা জনসাধারণ নিকটবর্তী বিজিবি পোষ্ট, বিওপি, কোম্পানীকে অবগত করে গমনাগমন করবে। এছাড়া রাতের অন্ধকারে, বৈরী আবহাওয়ায় এবং অস্বাভাবিক সময়ে কোন বাংলাদেশী নাগরিক চাষাবাদ, জমিতে কাজ অথবা অন্য কোন প্রয়োজনে সীমান্তে গমন করবে না। অতি গুরুত্বপূর্ণ যেমন, জোয়ারের কারনে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, মাছের ঘেরের মাছ চলে যাচ্ছে ইত্যাদি অতি গুরুত্বপূর্ণ কারণে সীমান্তে যাওয়ার প্রয়োজন হলে তাৎক্ষনিক বিজিবি কোম্পানী/বিওপি/পোষ্টে এসে বলবে এবং বিজিবি টহল দলের তত্ত্বাবধানে কার্যক্রম শেষ করে সীমান্ত ত্যাগের জন্য জনপ্রতিনিধিগণের মাধ্যমে এলাকার জনসাধারনকে প্রেষণা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়াও সোনাই নদীতে তীরবর্তী জনসাধারণের গোসল করা, মাছ ধরা ইত্যাদি কর্মকা-ের ছায়ায় অবৈধ চোরাচালান সহ সীমান্তের অপর পাড়ের ভারতীয় নাগরিকদের সাথে কথোপকথন ও অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণে উভয় দেশের সীমান্তবর্তী জনসাধারণ এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি/ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হইতে পারে।এজন্য যত্রতত্র গোসলের ঘাট না করা ও মাছ ধরার জায়গা না বানানো এবং এখন থেকে বিজিবির তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট ঘাট এবং নির্দিষ্ট মাছ ধরার জায়গায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম করা এবং এই সমস্ত কার্যক্রমের কালে সীমান্তের অপর পাড়ে ভারতের জনসাধারণের সাথে কোনরূপ বাক্যালাপ না করা অথবা চোরাচালানে লিপ্ত না হওয়ার বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। উপস্থিত জনপ্রতিনিধিগণ ও জনসাধারণ বিজিবির সকল উদ্যোগে সহায়তা প্রদান এবং এ বিষয়ে এলাকার জনসাধারন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সভা-সেমিনার ও প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুস্কৃতিকারীদের তালিকা বিজিবিকে প্রদানের বিষয়ে অধিনায়ককে আশ্বস্ত করেন।