কামাল হোসেনের প্রত্যাশা, ‘করোনাভাইরাস সরকার ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে নিয়ে মোকাবিলা করবে।’
গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেন জানান, ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় তার জন্ম। শহরের চৌরঙ্গী রোডের একটি বাড়িতে তখন পিতা ডাক্তার আহমাদ হোসেন আরও মা হোসনে আরা বেগমের সংসারে আলো হয়ে আসেন তিনি।
কামাল হোসেনের ভাষ্য— ১২ বছর বয়সে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর ১৯৪৯ সালে স্বপরিবারে বাংলাদেশে চলে আসেন তারা। ১৯৫৯ সালের ১৬ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের হাইকোর্টে আইন পেশায় প্র্যাকটিস শুরু করেন। ১৯৬১-৬২ থেকে ৬৭-৬৮ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। লন্ডনের অক্সফোর্ডের অলসোলস কলেজে দুই বছর এবং নাফিল কলেজে দুই বছর শিক্ষকতা করেছেন তিনি। আদালতে মামলার কার্যক্রমকে সামনে রেখে ১৯৬০-৬১ সালের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংস্পর্শে আসা শুরু হয় তার। মুক্তিযুদ্ধের সময় ড. কামাল পাকিস্তানের হরিপুর জেলে ছিলেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের মিয়াওয়ালি জেলে ছিলেন। পরে জাতির পিতার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হয়েছেন কামাল হোসেন।
সংবিধানবিশেষজ্ঞ কামাল হোসেন বলেন, ‘জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার রাজনৈতিক নেতা, শুভানুধ্যায়ী আর বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ফোনেই শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে।’
করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতি নিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকার সবাইকে নিয়ে এটা মোকাবিলা করবে, এটাই চাই। এটা তো জাতীয় চ্যালেঞ্জ।’
ত্রাণ বিতরণ নিয়ে যে অভিযোগ ও ঘটনা ঘটছে, এ সম্পর্কে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘সবাইকে ইনভলব করলে সমালোচনার সুযোগ কমবে।’
করোনাভাইরাসের কারণে কামাল হোসেন প্রতিষ্ঠিত গণফোরাম কোনও আয়োজন করতে পারেনি। দলটির সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, তার দলের সভাপতি হিসেবেই নয়, কামাল হোসেন আন্তর্জাতিকভাবে বিজ্ঞ একজন মানুষ। আর সোমবার তাকে তার ৮৩তম জন্মদিনে জানিয়েছেন শুভেচ্ছা।
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘স্যার তো নিজের ব্যাপারে কথা শুনতে অপরাগ। তবুও আমরা তাকে বলি, তিনি কেবল দল বা কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাই নন, জাতির জন্য স্মরণীয় একজন মানুষ।’
রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের জন্য নিজের অবস্থানের সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। বিনা বেতনে কাজ করেছেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের খনিজসম্পদের মালিকানা নামেমাত্র মূল্যে রক্ষা করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মামলায় নিজের দেশকে সবসময় জিতিয়ে এনেছেন কামাল হোসেন। এত বছর ধরে এই মানুষটি পাবলিক সার্ভিস দিয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তাকে শুভেচ্ছা জানাই।’