কালিগঞ্জ ব্যুরো: কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে চলছে মাদক বিকি-কিনির অভয়ারণ্য! তাই সাহস করে মাদক বিক্রিতে বাধা ও প্রতিবাদ করায় ইমান আলী শেখ নামে ১ বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ ৬ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে বেধড়ক পিটিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে মাদকস¤্রাট লিয়াকত বাহিনীর সদস্যরা। খবর পেয়ে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত মাইক্রোবাস যোগে প্রথমে ৬জনকে কালিগঞ্জ হাসপাতালে সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৫ জনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাত ৭ টার সময় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা রঘুনাথপুর গ্রামে। মাদক সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতরা হল বালিয়াডাঙ্গা রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত জুম্মান আলী শেখের পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমান আলী শেখ (৭২) তার পুত্র সাদেক আলী শেখ (২২) কন্যা হাফিজা খাতুন (২৪) মৃত মোসলেম আলীর কন্যা রোজিনা খাতুন (২৭) বারি শেখের পুত্র মিলন শেখ (২৩)এবং তার পুত্র তামিম (১২)।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে এবং বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সেলিম, কুতুব আলী, ইমন শেখ, শহীদ ঢালী সহ আশেপাশের লোকজন সাংবাদিকদের জানান বালিয়াডাঙ্গা রঘুনাথপুর গ্রামের বাহার আলী শেখের পুত্র মাদক সম্রাট লিয়াকত আলী শেখ (৫২) এবং তার পুত্র ইয়াবা লিটন (২৮) মিলে দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এবং পুলিশের নাম ভাঙিয়ে নিজ বাড়ি সহ বাজারের আশপাশ এলাকায় গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা বিক্রি করে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী পুলিশি ঝামেলা বা প্রতিবাদ করলে লিয়াকত বাহিনীর মাদক সেবী কিশোর গ্যাং দিয়ে হুমকি মারধরের ভয় দেখিয়ে বীর দর্পে ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। যে কারণে গ্রামের আশেপাশের পরিবেশ খারাপ হওয়ায় এবং উঠতি বয়সের যুবকরা বিপথগামী হওয়ায় সাহস নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা বৃদ্ধা ইমান আলী শেখ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা মাগরিবের নামাজ আদায়ের পরে ৭টার সময় বাড়িতে বহিরাগত লোকজন দেখে প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মাদকসম্রাট লিয়াকাত এবং তার পুত্র ইয়াবা লিটন বেধড়ক পিটিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। ওই সময় তার ডাক চিৎকারে তার পুত্র সাদেক আলী, কন্যা হাফিজা খাতুন এবং প্রতিবেশী মিলন, রোজিনা সহ পাশের লোকজন বাঁচাতে আসলে লিয়াকত বাহিনীর ক্যাডাররা তাদেরকে কুপিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ওই সময় স্থানীয়রা দ্রæত আহতদের উদ্ধার করে ওই রাতে প্রথমে তাদেরকে কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে পরে অবস্থার অবনীত হলে ৫জনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ঘটনার পর থেকে মাদকসম্রাট লিয়াকাত এবং তার পুত্র ইয়াবা লিটনকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে থানার অফিসার্স ইনচার্জ হালিমুর রহমান সাংবাদিকদের জানান এ ব্যাপারে তার কিছু জানা নাই এবং এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ তার নিকট আসে নাই অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে সেলিম মাহমুদ জানান মারপিটের ফলে রোগীদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমরা চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকায় থানায় অভিযোগ দিতে পারেনি তবে আজ রাতে অভিযোগ দেবো।
কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন স্থানে বাধাহীনভাবে চলছে মাদক বেচাকেনার মহা উৎসব। মাঝে মাঝে লোক দেখানো দুই একটি অভিযান চালালেও আর কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না। যে কারণে আবারো মাদক সেবী মাদক ব্যবসায়ীরা বীর দর্পে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে গেলেও দেখার কেউ নাই।
মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সহ ৬ জনকে কুপিয়ে জখম
পূর্ববর্তী পোস্ট