
তালা অফিস থেকে নজরুল ইসলামঃ তালা উপজেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ‘ভাইরাল বেগুনগাছ’ এখন কৃষি দপ্তরের নজর কাড়ছে। আশ্চর্যজনকভাবে টানা এক বছর ধরে ফুল ও ফল ধরে থাকা এই বেগুনগাছটি নিয়ে চলছে কৃষি কর্মকর্তাদের গবেষণা।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে তালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ মহসিন আলী, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিসেস আসমা আহমেদ ও আসমা তারা সেতু মাঠ পর্যায়ে গিয়ে গাছটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের ৮ম পর্বের মাঠ সংযুক্তি প্রশিক্ষণের ১৭ জন শিক্ষার্থী। দলটি স্থানীয় চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে অবস্থিত এই অনন্য বেগুনগাছ এবং পাশেই থাকা বায়োগ্যাস প্লান্ট ঘুরে দেখেন। কৃষি শিক্ষার্থীরা গাছটির বৃদ্ধি, ফুল ও ফল ধারণের ধারা, মাটির উর্বরতা, সার প্রয়োগ ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করেন।
সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ মহসিন আলী বলেন,“সাধারণত একটি বেগুনগাছ ৫ থেকে ৬ মাসের বেশি টিকে না। কিন্তু এই গাছটি প্রায় এক বছর ধরে ফুল ও ফল ধরে রেখেছে। এটি স্থানীয়ভাবে এক বিরল উদাহরণ। আমরা গাছটির জাত, মাটি ও সার প্রয়োগ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।”
কৃষি ডিপ্লোমা ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থী মোঃ সৌরভ সরকার বলেন,“গাছটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট, এবং এর ডালে সারাবছর ফুল ও বেগুন ঝুলে থাকে। আমরা খুঁজে দেখছি এটি কোনো বিশেষ জাতের প্রভাব নাকি কৃষি ব্যবস্থাপনার ফল।” অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোঃ জাহিদ হাসান, মোঃ নাসিমুন ইসলাম, মোঃ হুমায়ুন কবির, সৈকত দাস ও মোঃ মুজাহিদুল ইসলামসহ আরও অনেকে তথ্য সংগ্রহে অংশ নেন।
উপজেলা কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গাছটির অস্বাভাবিক ফলনক্ষমতা ও দীর্ঘায়ু নিয়ে একটি প্রাথমিক গবেষণা শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জৈব সার ব্যবহারের পাশাপাশি মাটির গঠন ও পরিবেশগত অভিযোজনই এই ব্যতিক্রমী ফলনের অন্যতম কারণ হতে পারে।
কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন, গবেষণার ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেলে এটি বাংলাদেশের কৃষিতে টেকসই বেগুন উৎপাদনের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।

