
শিল্পীগোষ্টি একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন। ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর সংগঠনটি কবি, লেখক ও গীতিকার সত্যেন সেন, রণেশ দাশ গুপ্ত, শহিদুল্লাহ কায়সারদের হাত ধরে জন্ম নেয়। সংগঠনটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অধিকার বঞ্চিত মেহনতি মানুষের পাশে থেকে সকল অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। এবং সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চা করা। সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চার কারণেই ২০১৩ সালে দেশের বৃহত্তম এই সাংস্কৃতিক সংগঠনটি একুশে পদক লাভ করে। বাংলাদেশে প্রায় ৩৬০টি শাখা ও বিশ্বের আটটি দেশে এর শাখা রযেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরাতে উদীচীর জেলা সংসদ রয়েছে, আছে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর শাখা। সাতক্ষীরাতে ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া উদীচীর ভেলা কমিটি, জাতীয় অনুষ্ঠানে এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উদীচী সাতক্ষীরা ভূমিকা রেখে চলেছে। ২০১১ সাল থেকে বাংলা বর্ষ বরণে উদীচী সাতক্ষীরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করে জেলা প্রশাসনের বিচারিক প্রতিযোগিতায় সাংস্কৃতিক ক্যাটাগরিতে প্রতিবারই প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে। এছাড়া সাতক্ষীরাতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যৌথভাবে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়ে থাকে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সাতক্ষীরাতে দশদিনব্যাপী তারুণ্য উৎসবের বই মেলাতে জেলা প্রশাসন ৪৬ টি স্টলের একটি স্টল উদীচী সাতক্ষীরাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। উদীচী সাতক্ষীরার নামে বরাদ্দ দেওয়া স্টলটির নম্বর ছিল ৪১।
১২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক বই মেলা উদ্বোধন পরবর্তী প্রতিটি স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং তারুণ্য উৎসবের বইমেলা যাতে আনন্দমুখর হয় সেজন্য স্টলে অবস্থান করা সকল প্রতিনিধিদেরকে সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটায় এনডিসি, উদীচী সাতক্ষীরার সেক্রেটারি সুরেশ পান্ডেকে জানান যে, বইমেলায় উদীচীর স্টলে লাগানো ব্যানারটা নামিয়ে নিতে। উদীচী সাতক্ষীরার সভাপতি বিকেল চারটার সময় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে উপস্থিত হয়ে ব্যানার নামাবার ব্যবস্থা নিলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাতক্ষীরার আহবায়ক ও সদস্য সচিব ডেকোরেটরের লোক কে ব্যানার খুলতে নিষেধ করে। উদীচী সভাপতি জানান, জেলা প্রশাসন ব্যানার নামাতে বলেছে আমরা নামাচ্ছি, তাহলে বাঁধা কেন। এ সময় আহবায়ক জানান প্রশাসন কেন উদীচীকে বইমেলায় স্টল দেওয়ার অনুমতি দিলো তার কৈফিয়ত দেবার ব্যানার নামাবেন। তাহলে এরা কী জেলা প্রশাসনের ওপরের ক্ষমতাবান। পরে সন্ধ্যার আগে উদীচী ব্যানারটি তারা পুড়িয়ে ফেলে এবং পাশের স্টল বীর শ্রেষ্ট হামিদুর রহমান গণগ্রন্থাগার থেকে চেয়ে উদীচীর স্টলে রক্ষিত কুড়িটি বই তারা লুট করে নেয় এবং তারা সংবাদ সম্মেলন করে জানায় উদীচী আওয়ামী লীগের দোসর ও অঙ্গসংগঠন। বই গুলো হাসিনা ও রাসেলের নামের। অথচ উদীচী রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে না এবং কুড়িটি বই এর কোনোটাই হাসিনা, রাসেলের নিয়ে না। সাতক্ষীরাতে উদীচী স্বচ্ছতার সাথে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল, কিন্তু গত একুশ ফেব্রুয়ারি, মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষ বরণে তাদের এবারে কোনো কর্মসূচি নেই বলে সাতক্ষীরার সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান জানান। বইমেলায় উদীচীকে স্টল বরাদ্দ দিয়েছে যেহেতু উদীচী কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন না, বা নিষিদ্ধ হতে পারে এমন কোনো আভাসও নেই, সেখানে তাদের স্টলের ব্যানার পোড়ানো কেনো হলো। এ দায়ভার কার!
লেখক: শেখ সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, উদীচী সাতক্ষীরা।
উপসম্পাদকীয়-
তারুণ্যের বই মেলায় উদীচী ব্যানার পোড়ানো এ দায় ভার কার
শিল্পীগোরী একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন। ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর সংগঠনটি কবি, লেখক ও গীতিকার সত্যেন সেন, রণেশ দাশ গুপ্ত, শহিদুল্লাহ কায়সারদের হাত ধরে জন্ম নেয়। সংগঠনটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অধিকার বঞ্চিত মেহনতি মানুষের পাশে থেকে সকল অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। এবং সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চা করা। সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চার কারণেই ২০১৩ সালে দেশের বৃহত্তম এই সাংস্কৃতিক সংগঠনটি একুশে পদক লাভ করে। বাংলাদেশে প্রায় ৩৬০টি শাখা ও বিশ্বের আটটি দেশে এর শাখা রযেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরাতে উদীচীর জেলা সংসদ রয়েছে, আছে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর শাখা। সাতক্ষীরাতে ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া উদীচীর ভেলা কমিটি, জাতীয় অনুষ্ঠানে এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উদীচী সাতক্ষীরা ভূমিকা রেখে চলেছে। ২০১১ সাল থেকে বাংলা বর্ষ বরণে উদীচী সাতক্ষীরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করে জেলা প্রশাসনের বিচারিক প্রতিযোগিতায় সাংস্কৃতিক ক্যাটাগরিতে প্রতিবারই প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে। এছাড়া সাতক্ষীরাতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যৌথভাবে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়ে থাকে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সাতক্ষীরাতে দশদিনব্যাপী তারুণ্য উৎসবের বই মেলাতে জেলা প্রশাসন ৪৬ টি স্টলের একটি স্টল উদীচী সাতক্ষীরাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। উদীচী সাতক্ষীরার নামে বরাদ্দ দেওয়া স্টলটির নম্বর ছিল ৪১।
১২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক বই মেলা উদ্বোধন পরবর্তী প্রতিটি স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং তারুণ্য উৎসবের বইমেলা যাতে আনন্দমুখর হয় সেজন্য স্টলে অবস্থান করা সকল প্রতিনিধিদেরকে সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটায় এনডিসি, উদীচী সাতক্ষীরার সেক্রেটারি সুরেশ পান্ডেকে জানান যে, বইমেলায় উদীচীর স্টলে লাগানো ব্যানারটা নামিয়ে নিতে। উদীচী সাতক্ষীরার সভাপতি বিকেল চারটার সময় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে উপস্থিত হয়ে ব্যানার নামাবার ব্যবস্থা নিলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাতক্ষীরার আহবায়ক ও সদস্য সচিব ডেকোরেটরের লোক কে ব্যানার খুলতে নিষেধ করে। উদীচী সভাপতি জানান, জেলা প্রশাসন ব্যানার নামাতে বলেছে আমরা নামাচ্ছি, তাহলে বাঁধা কেন। এ সময় আহবায়ক জানান প্রশাসন কেন উদীচীকে বইমেলায় স্টল দেওয়ার অনুমতি দিলো তার কৈফিয়ত দেবার ব্যানার নামাবেন। তাহলে এরা কী জেলা প্রশাসনের ওপরের ক্ষমতাবান। পরে সন্ধ্যার আগে উদীচী ব্যানারটি তারা পুড়িয়ে ফেলে এবং পাশের স্টল বীর শ্রেষ্ট হামিদুর রহমান গণগ্রন্থাগার থেকে চেয়ে উদীচীর স্টলে রক্ষিত কুড়িটি বই তারা লুট করে নেয় এবং তারা সংবাদ সম্মেলন করে জানায় উদীচী আওয়ামী লীগের দোসর ও অঙ্গসংগঠন। বই গুলো হাসিনা ও রাসেলের নামের। অথচ উদীচী রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে না এবং কুড়িটি বই এর কোনোটাই হাসিনা, রাসেলের নিয়ে না। সাতক্ষীরাতে উদীচী স্বচ্ছতার সাথে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল, কিন্তু গত একুশ ফেব্রুয়ারি, মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষ বরণে তাদের এবারে কোনো কর্মসূচি নেই বলে সাতক্ষীরার সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান জানান। বইমেলায় উদীচীকে স্টল বরাদ্দ দিয়েছে যেহেতু উদীচী কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন না, বা নিষিদ্ধ হতে পারে এমন কোনো আভাসও নেই, সেখানে তাদের স্টলের ব্যানার পোড়ানো কেনো হলো। এ দায়ভার কার!
লেখক: শেখ সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, উদীচী সাতক্ষীরা।