
নড়াইল সংবাদদাতা:
নড়াইলে কলেজছাত্র দীপ্ত হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে যশোর জেলা পিবিআই। এসময় দীপ্তর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকান্ডে জড়িত তিন আসামি ও চোরাই মোটরসাইকেল রাখার অভিযোগে আরো একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে । রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পিবিআই যশোরের পরিদর্শক শামিম মুসা জানান, শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ও রোববার ভোরে নড়াইল সদর ও নড়াগাতী থানা এলাকা থেকে এ সকল আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
আসামিরা হলেন নড়াইল সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের শিশির সরকারের ছেলে সুমন সরকার (৩০), সরোজিত বিশ্বাসের ছেলে সজীব কুমার বিশ্বাস (২২), গৌতম রায়ের ছেলে আকাশ রায় (২১) এবং নড়াগাতি থানার যোগানিয়া গ্রামের মৃত মিরাজ শেখের ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন ওরফে বদির (৩২)।
পিবিআই জানায়, গত শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে নড়াইল থানাধীন হোগলাডাঙ্গার নিজ বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন নিহত দীপ্তসাহা। পরের দিন শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হোগলাডাঙ্গা গরানের মাঠ হাজরাতলা মহাশ্মশান এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই যশোর। তদন্তের এক পর্যায়ে শনিবার রাতে নড়াইল থানাধীন গোপালপুরের নিজ নিজ বাড়ি থেকে আসামি সুমন, সজীব ও আকাশকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন রোববার ভোরে নড়াগাতী থানাধীন বিলাহর মাঠ এলাকা থেকে চিনতাই করা মোটরসাইকেলসহ আসামি সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি সুমন, সজীব, আকাশ ও নিহত দীপ্তসাহা একসঙ্গে মাদক সেবন করতেন। টাকার জন্য দীপ্তকে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন তিন আসামি। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার দীপ্তকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন তারা। এরপর দীপ্তকে গাঁজা বানাতে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে নায়লনের সুতা দিয়ে দীপ্তর গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন আকাশ ও সজীব। পরে পকেট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে দীপ্তর লাশ ফেলে চলে যান তারা। এরপর আসামি সুমনকে ফোন করে হত্যার বিষয়টি জানায় আকাশ ও সজীব। মোটরসাইকেলেটি বিক্রির জন্য অপর পলাতক আসামি সজিবের কাছে রেখে আসেন তারা। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাই মোটরসাইকেল রাখার অভিযোগে আসামি সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে পিবিআই যশোরের পরিদর্শক শামীম মুসা জানান, নড়াইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামিরা। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, নড়াইল সদরের বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের হোগলা ডাঙ্গা গ্রামের দ্বীনোবন্ধুর সাহার ছেলে ও নড়াইল সিটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী দীপ্ত সাহা (২২) নির্মম ভাবে খুন হন।