মো: আলহুসাই অমি:
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ চার বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠন হতে যাচ্ছে। বছরের শুরুর দিকে কমিটি গঠনের কথা থাকলেও করোনার প্রভাবে সম্ভব হয়নি। তবে শিঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
জানাগেছে, অনতিবিলম্বে জাবি ছাত্রদলের ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে। এর ৩ মাসের মধ্যে কাউন্সিলের আয়োজন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবে আহবায়ক কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও সাংগঠনিক টিম (ক) এর টিম লিডার হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা জোরদার সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যহত রেখেছি। এরই ধারাবাহিকতায় মেয়াদোত্তীর্ণ এবং অকার্যকর কমিটিগুলো ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আসন্ন কমিটিতে উদ্যামী তরুন মেধাবী এবং ত্যাগীদেরকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
কমিটির বিষয়ে মীর মোশাররফ হোসেন হলের ছাত্রনেতা ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো: সাইফুল ইসলাম আল-আমীন বলেন, বর্তমান কমিটি প্রায় পাঁচ বছর আগে গঠিত হলেও দূর্বল নেতৃত্বের কারনে তা পূর্ণাঙ্গ হয়নি এখনো। ফলশ্রুতিতে জাবি ছাত্রলদ কর্মীসংকটে। তিনি বলেন, ছাত্র সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রমে অগ্রগতি না থাকলে দল ঝিমিয়ে পড়ে। আমি মনে করি দলের শিরা উপশিরায় রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে তরুন ও মেধাবী নেতৃত্বের বিকল্প নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সুরে সুর মিলিয়ে সাইফুল ইসলাম আল-আমিন বলেন, তরুণরা সর্বদা উদ্যামী এবং লক্ষপূরণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দলকে খাঁদের কিনার থেকে টেনে তুলতে তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ বক্ষে ধারণ করে মাঠে নেমেছি। দেশের স্বার্থে, দলের স্বার্থে যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সদা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জনান তিনি।
বেরুনী হলের যুগ্ম আহবায়ক জরজীস মোহাম্মাদ ইব্রাহীম বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ব্যাচকেন্দ্রিক। সর্বশেষ কমিটিতে ৩৭ ব্যাচ থেকে সভাপতি, ৩৮ ব্যাচ থেকে সাধারণ সম্পাদক ও ৩৯ ব্যাচ থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক নিযুক্ত করা হয়েছিল। আশাকরি আসন্ন কমিটিতেও একইভাবে পদমর্যাদা বিবেচিত হবে।
মাওলানা ভাসানী হলের ছাত্রনেতা মো: মেহেদী হাসান প্রিন্স বলেন, বাবার হাত ধরে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ। তিনি রাজশাহী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী জেলা বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবং গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতি করে যাচ্ছি। ২০১৬ সালে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে মারধোরের শিকার হই। আসন্ন কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক পদে সিভি জমা দিয়েছি। আশাকরি দল আমার ত্যাগের মূল্যায়ন করবে।
কমিটির বিষয়ে ৪৩ ব্যাচের মাওলানা ভাসানী হলের ছাত্রনেতা কে এম রিয়াদ বলেন, সেই প্রথম বর্ষ থেকে ছাতদলের রাজনীতি করে যাচ্ছি। কমিটি উপলক্ষে অনেক সিনিয়র বড় ভাইদের আগমন ঘটেছে। যাদেরকে আমরা কমিটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে কোনো প্রোগ্রামে পাইনি। তাই সাংগঠনিক টিম (ক) এর কাছে আমাদের দাবী ব্যাচের সিনিয়রিটি নয় বরং রাজনৈতিক সিনিয়রিটি হোক নতুন নেতৃত্ব লাভের মানদন্ড।
এছাড়াও, জাবি ছাত্রদলের সহ সভাপতি নবীনুর রহমান নবীন, সহ সভাপতি মিজানুর রহমান রনি, যুগ্ম সম্পাদক জহির উদ্দিন মো: বাবর, সহ সভাপতি ফয়সাল হোসেন, শহীদ সালাম হলের যুগ্ম আহবায়ক আফনান আলী, সহ সভাপতি ইব্রাহিম খলিল বিপ্লব, যুগ্ম সম্পাদক ইস্রাফীল চৌধুরী সোহেল, যুগ্ম সম্পাদক ওয়াসীম আহমেদ অনিক, শহিদ রফিক জব্বার হলের যুগ্ম আহবায়ক মো: রাশিদুল ইসলাম রোমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান, হুমায়ন হাবিব হিরন, আল বেরুনী হলের ছাত্রনেতা এসএম শফিকুল ইসলাম, মীর মোশাররফ হলের ছাত্রনেতা মো: ইকবাল হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হলের ছাত্রনেতা সাইফ আল হাসান, শহীদ সালাম বরকত হলের ছাত্রনেতা মাজহারুল আমিন তমাল, শহিদ রফিক জব্বার হলের ছাত্রনেতা জিয়াউল হক জিয়া, মীর মোশাররফ হলের ছাত্রনেতা তাজুল ইসলাম এর নাম শোনা যাচ্ছে।