কিশোর কুমার: সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দিনমজুরের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা বসতবাড়ি ভাংচুরসহ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ তাদের। প্রায় ঘটনাব্যাপি চলা দখল যজ্ঞ শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। শনিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টায় তালা উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের তেরছি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। বর্তমানে ওই পরিবারটি নিরাপর্তা হীনতায় ভুগেছে বলে জানা গেছে । সরোজমিনে গেলে ভুক্তভোগী রবিন্দ্র নাথ ঘোষ জানান, তিন ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার।
প্রতিদিন তিন ছেলে ও তিনি দিনমুজুর করে যা পান তা দিয়ে চলে এই সংসার। ভিটে মাটি বলতে শেষ সম্বল ওই টুকু জমি তাদের। এদিকে জমির ওপর লোভ রয়েছে পাশের এলাকার খোরশেদ নামে এক ব্যাবসায়ীর।বার তিনি জমি দখল সহ নানা ভাবে হয়রানি করে আসছেন বলে অভিযোগ তার।এনিয়ে একাধিক বার জনপ্রতিনিধি কাছে শালিশ বিচারে গিয়ে বন্ধ হয়নি ওই ব্যাবাসায়ী নির্মমতা। এরই জেরে গত শনিবার তার বাড়িতে ঢুকে হামলা চালার খোরশেদ গাজী ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। ওই সময় তাদের মারপিটসহ রান্নাঘরে অগ্নিসংযোগ এবং বসত বাড়িতে ভাংচুর চালায় বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
একই এলাকার স্বপন কর্মকার জানান, তেরছি মৌজায় ২৫৭৩ দাগের ২৯শতক জমিতে বসত বাড়ি নির্মাণ করে রবিন্দ্র নাথ ঘোষ পনের বছর ধরে বসবাস করছেন এখানে। জমির নেশায় কয়েক বছর ধরে কলাপোতা গ্রামের মৃত জাহাবস্ক গাজীর ছেলে খোরশেদ গাজী তাদের সাথে অত্যাচার চালিয়ে আসত। বছর খানেক আগে খোরশেদ ১৯৬৩সালের একটি ভুয়া দলিল বের করে জমি দখলের চেষ্টা চালায় খোরশেদ। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ বন্ধ হয়ে যায় সেটি।
গত শনিবার সকালে খোরশেদের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসীরা রবীন্দ্র নাথ ঘোষের বাড়িতে হামলা চালায়। পরে তিনিসহ প্রতিবেশিরা বাঁধা দেন। ওই সময় সন্ত্রাসীরা রবিন্দ্র ঘোষের রান্না ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বসত বাড়িরভাংচুর চালায়। পরে ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ গিয়ে পরিস্তিতি নিয়ে আনে। পরিবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে জমি না ছাড়লে ভারতে পাঠানো হবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে তারা বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।
এবিষয়ে তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। জমির প্রকৃত মালিক রবীন্দ্র নাথ ঘোষ বলে এর আগে কাগজ পত্র দেখে রায় দিয়েছেন। হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে খোরশেদ গাজীর উদ্ধৃতি দিয়ে ছেলে এনামুল হক বলেন, ওই জমি আমাদের। তার স্বপক্ষে দলীল সহ কোর্টের রায় আছে আমাদের কাছে। তবে হামলার বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, আমরা জমি দখলে গিয়েছিলাম সত্য তাবে কোন ভাংচুর করিনি।
তালা থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী রেজাউল করিম জানান, ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।