
কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম কালুরঘাট সেতুতে সংস্কারের নামে চলছে গণহয়রানি, বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। সংস্কারের অযুহাতে সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখলেও রাতের আঁধারে সেতুতে দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিরা টাকার বিনিময়ে ভারি যাবনাচন চলাচলের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
কালুরঘাট সেতুর এমন অবস্থাতে সাধারণ মানুষ এ যেন নতুন ক্ষতে পুরানো মলম লাগানোর মত অবস্থা! গত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীন জানান, গত ১৩ জুলাই থেকে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিন সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ জন্য প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হবে। কিন্তু এই আদেশ নামে মাত্র! রাতে আরামছে চলছে যানবাহন, কাজ তো দূরের কথা ১৪ টনের যানবাহনে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দাপটের সাথে কালুরঘাট ব্রিজে চলছে ভারি যানবাহন। এমনই চিত্র নজরে এসেছে রাতের বেলা।
১০০ বছর আগে নির্মিত প্রথম সেতু, যা কালুরঘাট সেতু নামে পরিচিত। বয়সের ভার আর বিপুল যানবাহনের চাপে ক্রমশ নুয়ে পড়া এই একমুখী রেলসেতুটি দীর্ঘসময় ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একাংশের জনগণের বহুমুখী দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। প্রায় ২০ বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ঝ্ুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা পরও চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে চলছে যানবাহন। জোড়াতালি দেয়া ৯০ বছরের পুরনো সেতুটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে যান চলাচলের জন্য। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ। তাঁর উপর মেরামতের কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের যেন কোন প্রকার মাথা ব্যাথা নেই। রাতে কাজ চলার কথা থাকলেও চলে যানবাহন।
বোয়ালখালী ও পটিয়ার প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই সেতুর ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। এছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটের গাড়িও এই সেতু দিয়ে বিভিন্ন সময় চলাচল করে। সেতুর পূর্ব পাডড়ে বোয়ালখালী অংশে প্রায় ৫০টি কলকারখানা রয়েছে। সেতু নড়বড়ে হওয়ায় এসব কারখানা পণ্য পরিবহন করতে পারে না। গত প্রায় ৩০ বছর ধরে প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মূল প্রতিশ্রুতি হয়ে আসছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি থেকে গেছে প্রতিশ্রুতির জায়গায়, সেটার বাস্তব প্রতিফলন দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী দেখেনি গত ৩০ বছরেও। কিন্তু সেই সেতুর কোনো খবর নেই। কথার ফুলঝুরি আর মানুষ শুনতে চায় না। যদি জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকে, তাহলে সরকারের উচিত আমাদের জন্য একটি সেতুর বন্দবস্ত করা।