নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল এলাকায় দারুলহাদিস আহমাদিয়া মাদরাসায় আয়োজন করা হয় দুটি মাদরাসার নাইটগার্ড ও আয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া। অভিযোগ উঠেছিল, প্রায় ৫০ লাখ টাকা নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয় এই মাদরাসায়। নিয়োগের এই দূর্ণীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি,সরকারি কর্মকর্তাসহ মাদরাসা সংশ্লিষ্টরা। তবে এ ঘটনায় সংবাদ করতে গেলে একে একে পালিয়ে যান সবাই। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন মাদরাসা সুপার। এরপর নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছেন মাদরাসা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক।
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা এলাকার স্থানীয়রা জানিয়েছে, তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার কাশিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদরাসা, সরুলিয়া কিয়ামিয়া দাখিল মাদরাসা ও বড়বিলা সোনিয়া দাখিল মাদরাসায় নাইট গার্ড ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য নাইট গার্ড পদে ১০ লাখ ও আয়া পদে পাঁচ লাখ টাকা করে উত্তোলন করা হয়েছে। টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদরের বাঁকাল এলাকায় একটি মাদরাসায় গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুক্রবার সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাসহ মাদরাসা সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাঁকাল এলাকার ওই মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, নাইট গার্ড, আয়া পদে যারা ইতোমধ্যে টাকার মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়েছেন তারাসহ সাপোর্টিং পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আরও দুইজন করে পরীক্ষার্থী রয়েছেন। তবে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে একজন স্বীকার করেন, তারা সেখানে চাকুরীর পরীক্ষা ও নিয়োগের জন্য হাজির হয়েছেন। তবে কেউই নিজের পরিচয় দিতে রাজি হননি।
শহরের বাঁকাল এলাকায় দারুলহাদিস আহমাদিয়া মাদরাসায় যাওয়ার পর আলতাফ হোসেন নামের একজন মাদরাসাটি পরিচালক বলে দাবি করেন। তবে তিনি ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি। এছাড়া উপস্থিত থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কিছু না জানিয়েই একে একে পালিয়ে যেতে থাকেন। এক পর্যায়ে মাদরাসাটির পরিচালক দাবী করা আলতাফ হোসেনও অফিস রুমে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন।
ঘটনাটি অবহিত করা হয় সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ্ আল মামুনকে। তিনি বলেন, মাদরাসার নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয় না। বাঁকাল এলাকার ওই মাদরাসায় তারা গোপনে নিয়োগের কার্যক্রম করে থাকেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
এদিকে, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই মাদরাসায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য হাজির হন মাদরাসা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আব্দুল মুকিব। গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আয়োজন ও তথ্য গোপনের বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেন।
মাদরাসা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আব্দুল মুকিব বলেন, গোপনে নিয়োগের পরীক্ষা হবে না। যখন সকলকে জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা পরীক্ষা নিতে পারবেন তখন আমি পরীক্ষা নিতে পারবো। আপাতত এই নিয়োগ বাতিল করা হলো।