
হাফিজুর রহমান:
সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। দোকান-পাট, গণ পরিবহন বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কায় গত কয়েকদিন ধরে বেড়েই চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের বেচা-কেনা। কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে এক শ্রেনীর অসাধু, অধিক মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চাউল, ডাউল, পেঁয়াজ, রসূন সহ নিত্য পন্যের খোড়া অজুহাতে বেশি দামে বিক্রি করছে। আতঙ্ক গ্রস্থ মানুষ তীব্র সংকটের আশঙ্কায় জিনিস পত্র কিনছে হুমড়ি খেয়ে আর সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিক্রেতেরা। প্রতিদিন বাড়ছে নিত্য পন্যের দাম। শুক্রবার সরেজমিনে নাজিমগঞ্জ বাজার, রতনপুর বাজার, উত্তর কালিগঞ্জ বাজার, ফুলতলা বাজার, মৌতলা বাজার, ও কাঁচামালের আড়ত ঘুরে দেখা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের পর্যাপ্ত সরবারাহ নেই। চাহিদার তুলনায় কম খাদ্য পন্য থাকায় দাম উদ্ধমুখী। গত দুইদিনে চাউলের দাম হু হু করে বাড়ছে । ৫০ কেজির বস্তা ১৯ শ থেকে এক লাফে ৫ শ টাকা বেড়ে ২৩ থেকে ২৪শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অনুরুপ মোটা চাউল ১১/১২শ থেকে ১৯ শত টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি থেকে একলাফে ৬০ টাকায় এবং রসূন ৬০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যে আলু ২দিন আগে ১২ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে সে আলু আজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা । মৌতলা পাইকাড়ী আড়তে ১২’শ টাকা মণ বস্তার আলু এখন ১৮/১৯ শত টাকা বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে খুচরা বাজারে প্রভাব পড়ায় সাধারণ জনগনের নারর্ভিশ্বাস শুরু হয়েছে গেছে। মাছ, সবজি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব পন্যের দাম উদ্ধমূখী। বিভিন্ন দোকান থেকে কোম্পানীতে অর্ডার দিয়েও মিলছে না মালামাল। বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনকে জনগন তাদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে। তারই সূত্র ধরে শুক্রবার বেলা আনুমানিক ১১ টার সময় কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল উপজেলার দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাঁশতলা বাজারে উপজেলা নির্বাহী মোজাম্মেল হক রাসেল নিজে উপস্থিত থেকে অভিযান চালিয়ে সত্যতা মেলায় এবং মূল্য বেশি রাখার অপরাধে ভ্রামমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। বাঁশতলা বাজারের নব ষ্টোরের মালিক তপন দত্ত কে ২ হাজার টাকা, বেশি দামে চাউল বিক্রি করায় চাউল ব্যবসায়ী আলম হোসেনকে ৫ হাজার টাকা, শাহআলমকে ৪ হাজার টাকা, মুদি ব্যবসায়ী অচিন্তকে ১০ হাজার টাকা, আলিম এন্টার প্রাইজের মালিক আবুল কালামকে ৫ হাজার টাকা, ফতেমা চাউল আড়তের মালিক মনিরুজ্জামানকে ৬ হাজার টাকা, আব্দুল্লার চাউলের আড়ত ৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়। অভিযানের সময় কোন দোকানে মূল্য তালিকা না পাওযায় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও নির্বাহী মাজিষ্টেট মোজাম্মেল হক রাসেল ব্যবসায়ীদের সর্তক করে দেন। এর পর বাজারে করোনা ভাইরাস সচেতনাতায় লিফলেট এবং বক্তব্য রাখেন। ঐ সময় হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ গোলাম মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন। করোনা ভাইরাস নির্দেশনা উপেক্ষা করে গন জমায়েতের অপরাধে কালিগঞ্জ ইসলামী ব্যাংক সংলগ্ন রাস্তার ধারে নাজিমুদ্দিনের পুকুরে ৫ হাজার টাকা টিকিটে মাছ ধরার সময় করোনা ভাইরাস নির্দেশনা অমান্য করায় ভ্রামমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট সহকারি কমিশনার (ভূমি) সিফাতুল্লাহ পুকুর মালিকের পুত্র সাহাবুদ্দিনের নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। ঐ সময় থানার অফিসার্স ইনচার্জ দেলোয়ার হুসেন এবং ওসি তদন্ত আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেলের বাজার পরিদর্শনকে স্বাগত এবং সাধুবাদ জানিয়েছে উপজেলাবাসী। বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখতে অসাধু, মুনাফা খোর ব্যবাসায়ীদের প্রতি যেন এই ভাবে প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যহত থাকে সেই দাবি উপজেলা বাসীর।