
কলারোয়া ব্যুরো: কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নে ইভিএমের মাধ্যমে এবং ৯টি ইউনিয়নে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে চারটি ইউনিয়নে নৌকা ও ছয়টিতে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাস। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে ৷
নির্বাচন অফিস স‚ত্রে জানা যায়, ১ নম্বর জয়নগর ইউনিয়নে অটোরিকশা প্রতীকের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিশাখা তপন সাহা ২ হাজার ৭০৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের প্রার্থী জয়দেব কুমার সাহা পেয়েছেন ২ হাজার ২৬৭ ভোট। বিএনপির নেতা ছিদ্দিকুর রহমান (চশমা প্রতীক) ১ হাজার ৮৭৬, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান শামছুদ্দীন আল মাসুদ বাবু পেয়েছেন ১ হাজার ৭১৩ ভোট, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আব্দুল আজিজ পেয়েছেন ৪৪১ ভোট।
২ নম্বর জালালাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের মাহফুজুর রহমান নিশান ৫ হাজার ৬৮৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক আমজাদ হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৫০৩ ভোট। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ১১৭ ভোট।
৩ নম্বর কয়লা ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ সোহেল রানা ২ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে প্রথমবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাস্টার আসাদুল ইসলাম পেয়েছেন ২ হাজার ৪৬৭ ভোট। বিএনপি সমর্থিত আনারস প্রতীকের মোঃ রফিক মোল্লা পেয়েছেন ৫৬০ ভোট। কিন্তু তিনি নির্বাচনের দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজের ও সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
৪ নম্বর লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম ৪ হাজার ২৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার নুরুল ইসলাম পেয়েছেন ২ হাজার ৪৫৮ ভোট।
৫ নম্বর কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড কেঁড়াগাছিতে ভোট কারচুপির অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে। তবে এ ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮টি ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের প্রার্থী সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিল ৪ হাজার ৬৯৩ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মারুফ হোসেন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৫৯ ভোট। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ভুট্টো লাল গাইন পেয়েছেন ৩ হাজার ২৮৪ ভোট।
৬ নম্বর সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির হোসেন হেলাল ৭ হাজার ৭৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৭৯ ভোট। আনারস প্রতীকের বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আকবর আলী বুলবুল পেয়েছেন ১৬০ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চশমা প্রতীকের আলমগীর আজাদ পেয়েছেন ৮৮ ভোট।
৭ নম্বর চন্দনপুর ইউনিয়নের ১০টি ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের প্রার্থী ডালিম হোসেন ৬ হাজার ৮৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি ৪ হাজার ৫৯১ ভোট পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক মেম্বার আব্দুল লতিফ মিঠু মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়েছেন।
৮ নম্বর দেয়াড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান গাজী মাহবুবুর রহমান মফে ৩ হাজার ৬৪৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে আবারও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন নির্বাচনে অংশ নিয়ে মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৭১ ভোট। অপরদিকে, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চশমা প্রতীকের আব্দুল মান্নান পেয়েছেন ৩ হাজার ২৯১ ভোট, আনারস প্রতীকের (স্বতন্ত্র) প্রার্থী মিনাজ উদ্দিন পেয়েছেন ১ হাজার ৩২০ ভোট, টেলিফোন প্রতীকের (স্বতন্ত্র) প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক পেয়েছেন ৫৮ ভোট ও টেবিল ফ্যান প্রতীকের নাজমা পারভীন পেয়েছেন ৩৭ ভোট।
ইভিএমে অনুষ্ঠিত ৯ নম্বর হেলাতলা ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন ৬ হাজার ৪৮০ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চশমা প্রতীকে জামায়াত ইসলামের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তালেব সরদার ৪ হাজার ৯৩৯ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরদার আনসার আলী ১ হাজার ১৮৭ ভোট পেয়েছেন ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবদুল মাজেদ বিশ্বাস আনারস প্রতীকে ৮৩ ভোট ও জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন ঘোড়া প্রতীকের ৪৫ ভোট পেয়েছেন। ওই ইউনিয়নের মোট ভোটার ১৬ হাজার ৮৯৩ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ রয়েছেন ৮ হাজার ৩৮৭ জন ও নারী ৮ হাজার ৫০৬ জন।
১০ নম্বর যুগিখালী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল হাসান ৭ হাজার ৪১৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওজিহার রহমান চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৬৩ ভোট। আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী এরশাদ আলী আনারস প্রতীকের পেয়েছেন ২১৬ ভোট।
সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটকেন্দ্রে না আসতে বাধ্য করার অভিযোগ করেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।