বিশেষ প্রতিবেদক:
করোনায় স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। থমকে গেছে অর্থনীতি। ১৯১৮ সালের শেষের দিকে স্প্যানিস ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীতে ২ কোটিরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। একশ বছর পর ২০২০ সালে আবারও প্রকৃতির ভয়াবহ রূপ দেখলো বিশ্ব। চীনের উহান থেকে উৎপত্তি (কোভিড-১৯) করোনার প্রাদুর্ভাবে পৃথিবীজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে এবং যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর ব্যাতিক্রম নয়। WHO এর তথ্যানুসারে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্ত হয়ে এপর্যন্ত মারা গেছে ৩ লক্ষ ৯১ হাজার ৮৩৯ জন যার মধ্যে বাংলাদেশে মারা গেছে ৮৪৬ জন।
করোনায় মৃত্যুর মিছিলের বিপরীতে সম্মুখ যোদ্ধাদের অগ্রভাগে ডাক্তাররা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের। সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্র্যাব, সাংবাদিকসহ দেশের সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। তাদের আত্মনিয়োগ মিডিয়ার মাধ্যমে চোখে পড়ছে সবারই। কিন্তু দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড রক্ষণাবেক্ষনের কাজে নিয়োজিত ব্যাংকারদের কথা কেউ বলছেনা। বলছেনা দীর্ঘ ৬৬ দিন লকডাউনের মধ্যেও কর্মক্ষেত্রে তাদের সরব উপস্থিতির কথা। জনসাধারণ যখন করোনা ভয়ে নিজেদের গৃহবন্দি করে রেখেছে তখন জীবনের মায়া ত্যাগ করে প্রতিনিয়ত অফিস করে গেছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়ে অফিসে গিয়ে শত শত গ্রাহককে সম্মুখ সেবা প্রদানের মাধ্যমে তারা নিজেদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছিল। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হলেও ব্যাংকাররা ছিলেন অন ডিউটি। দেশের অর্থনীতিকে দুমড়ে মুচড়ে পড়া থেকে বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা গ্রাহক সেবা প্রদান করে গেছে । অথচ সেই ব্যাংকারদের কথা একবারও মিডিয়া বলছেনা, বলছেনা জনসাধারণ।
নরসিংদী জনতা ব্যাংকের এজিএম জনাব সানাউল্লাহ’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, লকডাউনের মধ্যে রোস্টার ডিউটি করছি। তবে অন্যদের মত ছুটি নেই। আমরা কাজ বন্ধ করে দিলে মানুষের জীবনব্যবস্থা ব্যহত হবে। অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়বে জনগন। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংকাররা করোনার শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে গ্রাহক সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
দেখাগেছে, প্রতি একশ বছর পর পর পৃথিবীতে মহমারীর আগমনে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে। ১৭২০ সালে প্লেগ, ১৮২০ সালে কলেরা এবং ১৯১৮ সালের শেষের দিকে স্প্যানিস ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হয়ে কোটি কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল। ২০২০ সালে পৃথিবী আবারও ভয়াল এক ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। দেশে প্রতিনিয়তই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী এবং মৃতের সংখ্যা। সংকটময় এ পরিস্থিতিতে সবাইকে নিজের জায়গা থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যেতে হবে।
আলহুসাইন অমি
০১৬১১ ৮৪৪৬৬৬