
কোন মহলের হুমকি-ধমকি কাজে আসেনি, আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা আকড়ে ধরেছে ঈগল প্রতীক;
লাঙ্গল প্রতীককে জেতাতে আওয়ামী লীগের কতিপয় শীর্ষ নেতার জোর চেষ্টা কাজে আসেনি, জয়ী হতে অর্থ ছড়ানোর ছক;
নিজস্ব প্রতিবেদক: কোন মহলের হুমকি-ধমকি কাজে আসেনি সাতক্ষীরা ২ আসনের নির্বাচনী মাঠে। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের লড়াই জমে উঠেছে। জেলা আওয়ামী লীগের কতিপয় শীর্ষ নেতার লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে জোর প্রচেষ্টা অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের প্রতি আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশের সমর্থন ভোটের মাঠকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।
১৮ই ডিসেম্বর প্রতীক পাওয়ার পরই জাতীয় আশরাফুজ্জামান আশু মহাজোটের প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী দাবী করে ব্যানার, লিফলেট, পোস্টার নিয়ে প্রচার শুরু করেন। নৌকা প্রতীক হারানো আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবু এবং মনোনয়ন বঞ্চিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নজরুরল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, যুবলীগের আহবায়ক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে দু’বারের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে নির্বাচনের মাঠে রুখে দেওয়ার ছক কষা হয়। এরই অংশ হিসেবে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি বর্ধিত সভা ডাকা হয়। ওই সভা থেকে বক্তাদের মধ্যে কেউ কেউ ৭ তারিখের নির্বাচনের পর এমপি রবি থেকে সাতক্ষীরা থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দেন। ওই সভা থেকেই আশরাফুজ্জামান আশুকে জোট কিংবা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সর্বস্তরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীককে বিজয়ী করার আহবান জানানো হয়। এরপর শুরু হয় সর্বস্থরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের টানা হেঁচড়া। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ২৮জন সভাপতি/সম্পাদকের মধ্যে ২৭জন এবং প্রায় সব ইউপি চেয়ারম্যান অবস্থান নেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের কাজী আক্তার হোসেন, শেখ সাহিদউদ্দীনের নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্বে পৌর আওয়ামী লীগ, পাশাপশি আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপির পক্ষে অবস্থান নেন। পাল্টে যায় ভোটের মাঠের চিত্র। অপ্রতিদ্বন্দ¦ী হয়ে ওঠে ঈগল প্রতীক। অবস্থা বে-গতিক দেখে চির প্রতিপক্ষ এমপি রবিকে নির্বাচনে ধরাশায়ী করতে দ্বিতীয় ছক হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হুমকি-ধমকি ও প্রলোভন দেখান লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কতিপয় শীর্ষ নেতা। কারও পদ বঞ্চিত করার ভয়, কারও নতুন পদ দেয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। মিথ্যাচার করে বলা হয় লাঙ্গল প্রতীকের সাথে আওয়ামী লীগের জোট কিম্বা মহাজোট হয়েছে। লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের কর্মীকে কাজ করতে হবে। শীর্ষ নেতাদের এসব হুমকি ধমকি কাজে আসেনি। ত্যাগী নেতাকর্মীরা ঈগল প্রতীক আকড়ে ধরে জোর কদমে প্রচার প্রচারণা চালাতে থাকে। এরই মধ্যে শুরু হয় একটি মহলের গনহারে হুমকি ধমকি। তাতেও কাজ হয়নি। বঙ্গবন্ধুর সৈনিকরা ভয় পায়নি। তারা এপাশ ওপাশও হয়নি। তাদের কথা ছিলো মাঠে নেমেছি ঈগল প্রতীককে জয়ী করার জন্য। কেউ গুলি করলে বুক পেতে দেবো। কোন ভাবেই পালাবো না। গুলিও পিঠে লাগবে না। ৭ তারিখের নির্বাচনে ঈগল প্রতীকে জয় ছিনিয়ে আনব ইনশাল্লাহ। নির্বাচনে জনসভার মাঠে লাঙ্গল প্রতীকের জনসভা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবু, অধ্যাপক আবু আহমেদ ও যুবলীগের আহবায়ক মিজানুর রহমানসহ লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশু প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি রবিকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় বক্তব্য দেন। তারা ঘোষণা দেন ৭ তারিখের নির্বাচনের পর সাতক্ষীরা থেকে এমপি রবিকে তাড়িয়ে দেয়া হবে। লাঙ্গল প্রতীকের জনসভা থেকে আসা বক্তব্যকে সাধারণ ভোটাররা ভালো ভাবে নেয়নি। হুমকি-ধমকিকে পাত্তা দেয়নি জনপ্রতিনিধিসহ ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। ফলে ভোটের মাঠে বেশ এগিয়ে আছে ঈগল প্রতীক। এদিকে নির্বাচনের মাঠ ঈগল প্রতীকের অনুক‚লে দেখে প্রতিপক্ষরা কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাতে একজন স্কুল শিক্ষকের ওপর হামলাকে ইস্যুবানিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। এটাও তাদের জন্য বুমেরাং হয়ে দাড়িয়েছে। পরাজয় এড়াতে সর্বশেষ ছক হিসাবে তারা ভোট কেনার জন্য মাঠে নেমেছে। গতকাল রাত ৯টায় ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নে একাধিক ইউপি সদস্যকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেনকে টাকার বস্তা নিয়ে ছুটতে দেখা গেছে। লাবসা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আব্দুল আলিমসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা বাড়ি বাড়ি যেয়ে টাকা দিয়ে ভোটারদের কাছ থেকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রæতি নিচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে প্রতিটা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ভোট কেনার জন্য দায়িত্বশীলদের কাছে মোটা অংকের টাকা ছড়িয়ে দিয়েছে। শুধু শওকত নয় প্রতিটা ইউনিয়নে লাঙ্গল প্রতীকের অনুক‚লে ভোটার সংগ্রহ করতে মোটা অংকের অর্থ ছড়ানো হয়েছে।