
রাশেদ আলী, যশোর থেকে: সরকারের সড়ক ও জনপদ বিভাগের মুজিব বর্ষের স্লোগান ও অঙ্গিকার সড়ক হবে সংস্কার। এ কথাটির বাস্তব রূপ পাবে কি ঝাঁপা গ্রামের অবেলিত বসবাসরত সাধারণ মানুষ।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ৯ নং ঝাঁপা ইউনিয়নের জনগন বর্তমান সরকারের জনপদের উন্নয়নমূখীর স্বাদ পাওয়া থেকে অনেক দূরে রয়েছে ।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ৯ নং ঝাঁপা ইউনিয়নের জনগন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের স্বাদ পাওয়া থেকে অনেক দূরে রয়েছে । এ গ্রামে রয়েছে ১টি বাজার, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসা, ৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি পুলিশ ফাড়ি । উপজেলার বৃহত্তর গ্রাম ঝাঁপা আর অবহেলিত বেশী অত্র গ্রামের সকল কাঁচা রাস্তা। যা দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার থেকে বঞ্চিত। হাল্কা বৃষ্টি হলে মনে হয় যেন বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশের কোন গ্রাম নয়। যেন নতুন কোন সমুদ্র থেকে জেগে উঠা একটি নতুন দ্বীপ। এ গ্রামের অধিকাংশ রাস্তা দিয়ে বর্ষা বা শুকনো মৌসুমে চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসী সহ আশেপাশে কয়েকটি গ্রামের মানুষের ।
দূর্ভোগকৃত এসকল রাস্তার মধ্যে প্রধান প্রধান রাস্তা ঝাঁপা সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ঝাঁপা মহিলা মাদ্রাসা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার ভাঙ্গাচুরা ইটের রাস্তা, ঝাঁপা বাজার আবাসন প্রকল্প থেকে মহিলা মাদ্রাসা হয়ে ঝাঁপা বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু প্রায় ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ঝাঁপা সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসা থেকে কোমলপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার ভাঙ্গাচুরা রাস্তা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীনের বাড়ি থেকে মড়গাং পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ঝাঁপা বাগাডাঙ্গি নিজামের বাড়ি থেকে ঝাঁপা উত্তর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় হয়ে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু পর্যন্ত ৪ কিঃ কাঁচা রাস্তা, ইনার বাসতলা থেকে উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও মাধ্যমিক বিদ্যালয় হয়ে শান্তির ঘাট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাচা রাস্তা, পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে একদিকে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু ও অপরদিকে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ।
এসকল রাস্তায় বৃষ্টি শুরুতেই হাঠু সমান কাঁদা হওয়ায় লোকজনের যাতায়াতের অনুপোযোগী হয়ে উঠে। এবং শুকনো মৌসুমে হালকা বাতাসে ধূলো উড়ে রাস্তার পাশে বসবাসকারীদের বসবাসের অনুপযোগি হয়ে উঠে।
ফলে গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় কাঁদা পানিতে এবং ধূলোময়লা মেখে বই খাতা ও জামা কাপড় নষ্ট হওয়ায় মাঝ রাস্তা থেকে বাড়িতে ফিরে আসে।
অবহেলিত যাতায়াতের রাস্তাগুলোর বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগী বসবাসকারীরা, তারা জানান সরকার আসে সরকার চলে যায় চেয়ারম্যান আসে চলে যায় আমরা সাধারণ মানুষ শুধু থেকে যাই ভোট দেওয়ার জন্য।
কথা হয় ঝাঁপা গ্রামের মাষ্টার আজিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমারা ঝাঁপা গ্রামবাসী সব ক্ষেত্রে অবহেলিত। বৃষ্টি হলে আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। তেমনি শিশু, ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজ যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সরকারের সংশ্লিষ্ট কমকর্তাদের নিকট কাঁচা রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার করার জোর দাবি জানাচ্ছি ।
এবিষয়ে কথা হয় উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমানের সাথে। তিনি জানান, বৃষ্টি শুরু হলেই শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে যায় তারা বাড়ি থেকে স্কুলে আসলেও স্কুলে পৌছানোর আগেই কাঁদায় পড়ে ভিজে বাড়িতে ফিরে যায়।একই কথা বলেন উত্তর পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম হোসেন ও পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ।
রাজগঞ্জ বাজারের ব্যাবসায়ী ঝাঁপা গ্রামের আনিছুর রহমান জানান, আমরা বৃষ্টি হলে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে আসতে পারি না। রাস্তায় হাটু কাঁদা ও পনি বেধে চলাচলের জন্য কোন উপায় থাকে না। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে এখন পর্যন্ত অবহেলিত জনপদের বাসিন্দা। বর্তমান সরকার জনবান্ধন সরকার তবুও আমরা আজ অবহেলিত। সরকারের নিকট আমাদের আকুল আবেদন আপনার সুদৃষ্টি পেলে আমরা অবহেলিত জনপদ থেকে মুক্তি লাভ করবো। একই সাথে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপির নিকট অবহেলিত গ্রামের সকল কাঁচা রাস্তা সংস্কারের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন অবহেলিত ঝাঁপাবাসী।