
মো. কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম অফিস:
প্রতিনিয়ত চট্টগ্রাম দিনদিন প্রতিদিন করোনা রোগীর সংখ্যা মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ঘাতক মরণব্যাধী নিরবে আঘাত করা শুরু করেছে প্রথম প্রথম রোগের আক্রমনের আলামত দেখা যেতো এখন তা নাকী একেবারে বুঝা যাচ্ছেনা। ঢাকার পর চট্টগ্রাম এখন রেডজোনে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন রোগের আক্রমনে রোগির সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি মৃত্যুর লাশের মিছিল ও এগিয়ে কখন কে কি ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে তা বুঝার কোনো উপায় নেই। আমরা এক মহাবিপদে মধ্যে দিনযাপন করে যাচ্ছি। বাংলাদেশর অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একমাত্র চট্টগ্রাম বন্দর যার মধ্যে পুরো বিশ্বের সাথে সংযোগ রয়েছে। অন্যদিকে ৩টি ইপিজেড, পাশাপাশি অসংখ্য শিল্পকারখানা, সেই চট্টগ্রামের মানুষ আজ করোনা রোগের আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে করুনদশা জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। অন্যদিকে রোগীর সংখ্যার তুলনায় হাসপাতালে সীটের সংখ্যা একেবারে কম। মাত্র ৩১০টি সীট রয়েছে, অথচ রোগীর সীটের তুলনায় রোগীর সংখ্যা ৫গুন বেশী। অন্যদিকে আইসিইউ এবং ভেন্টিলেটর মাত্র ১০টি, যেখানে ১০জনের বেশী অবস্থা খারাপ রোগী চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না। যার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রামকে যদি এই দু:বস্থা হতে রক্ষা করতে হয় তাহলে জরুরী ভিত্তিতে আইসিইউসহ রোগীর সীটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
অন্যদিকে শিল্পকারখানায় লক্ষ লক্ষ শ্রমিকগণ স্বাস্থ্যবিধি একেবারে মানছেনা। যেভাবে মন চাই সেইভাবে চলাফিরা করছে বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদে বেলায় এই ধরনের অনিয়ম ঘটছে। আমি চট্টগ্রাম শহরের অলিগলিতে ঘুরে দেখেছি কোথাও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা। মুখে কোন মাস্ক নেই হাতেও কোনো গ্লাভস নেই। একদিকে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি অন্যদিকে সীটের সংকট, আবার এদিকে যার যেভাবে ইচ্ছা সেইভাবেই চলাচল করছে। আসলে কোন নিয়ন্ত্রন নেই। কে করবে কাকে নিয়ন্ত্রন? কে শুনবে কার কথা? দু:খ ও লজ্জাজনক অবস্থায় চলছে আমাদের চট্টগ্রাম তার জন্য প্রশানকে একটু কঠোর হতে হবে না হয় আমরা চট্টগ্রামবাসী এই বিপদ হতে রক্ষা পাবেনা। চট্টগ্রামবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের ১৩ দফা তুলে ধরলাম-
১. অগনিত টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে। সব জেলাতে টেষ্টের ব্যবস্থা করতে হবে ।
২. এর সাথে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তায় ফিল্ড হসপিটাল প্রতিটি জেলায় জরুরী ভিত্তিতে স্থাপন করতে হবে।
৩. জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা করে নিতে হবে।
৪. ডাক্তার নার্সদের জন্য জরুরী ট্রেনিংয়ের ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পোশাক নিশ্চিত করতে হরে।
৫. যে সব আন্তর্জাতিক সাহায্য আসছে এ সবকিছুর যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।
৬. ইতালি. আমেরিকা, যুক্তরাজ্যের মতো সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করা যাবে না।
৭. যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের প্রতি সম্মান জনক আচরন ও চিকিৎসার সুযোগ করে নিতে হবে। অবহেলার কারণে কোন মৃত্যু যেন আর না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হরে । ভিআইপি থেকে শুরু করে বস্তিবাসী যে কেউ এতে আক্রান্ত হতে পারেন বিনা নোটিশে ।
৮. করোনা ভাইরাসের কারণে মৃত ব্যক্তির যথাযথ জানাজা-দাফন/ সৎকারের নিশচয়তা দিতে হবে ।
৯. আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার গাইডেন্স অনুযায়ী বর্তমানে যেসব ওষুধ নিয়ে বিভিন্ন দেশে বৃহৎ সফলতা অর্জিত হয়েছে এবং ট্রায়াল হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি আছে, সেগুলি সতর্কতার সাথে রোগী বিশেষের ক্ষেত্রে পার্শ প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে সুব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে । এ ঔষুধগুলি নিয়ে কেউ যেন ব্যবসা না করেন তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
১০. পরিস্থিতি সপ‚র্ণ ঝুঁকিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত লক ডাউন যথাযথভাবে চালু রাখতে হবে, তবে অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন, জরুরি সার্ভিস, ওষুধ এবং খাদ্য সামগ্রীর জন্য যাতায়াতের সুযোগ শর্তাধীন রাখতে হবে ।
১১. প্রবাসীদের প্রতি কোনো হয়রানি যেন না হয় তার নিশ্চয়তা দিতে হবে ।
১২. গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে ।
১৩. দেশপ্রেমিক সকল দল ও নেতৃস্থানীয়. ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা, উপজেলা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা ভাইরাস সচেতনতায সমম্বয় কমিটি করুন। এ ব্যাপারে সরকারকে ও সরকারি দলকে উদ্যোগ নিতে হবে ।