
- যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ও তাদের ৯ সহোদরের নামে শত কোটি টাকার সম্পদ;
- নামে-বেনামে ভূয়া কোম্পানি খুলে ব্যাংক লোন গ্রহণ পূর্বক আত্মসাত;
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভুয়া কোম্পানি খুলে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাতক্ষীরার লাবসার যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ও তাদের ৯ সহোদর। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ভূয়া কোম্পানি খুলে ব্যাংক লোন গ্রহণ পূর্বক আত্মসাত, মূল্য সংযোগ কর ও আয়কর ফাঁকি, মানিলন্ডারিং এর সম্পৃক্ত অপরাধকরাসহ বিদেশে অর্থ পাচার এবং নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনা বটিয়াঘাটা উপজেলার যুদ্ধাপরাধ মামলা নং ১৯/২০১১ এর ৩ ও ৪ নং এজাহারভুক্ত আসামি শেখ মোজাহেদুল হক ও শেখ মাসুদুল হক। তাদের সহদর শেখ মারেজুল হক, শেখ মাহেনুল হক, শেখ সাইদুল হক, শেখ মফিজুল হক, শেখ মহিদুল হক, মনিকা পারভিন। তাদের পিতা মৃত শেখ আব্দুর রশিদ। তাদের নামে ভূয়া কোম্পানি খুলে ব্যাংক লোন নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, আয়কর ফাঁকি, মানি লন্ডারিং সহ বিদেশে অর্থ পাঁচার ও শত শত কোটি টাকার আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের ই/ আর নং-১৪/২০২২ (বিশেষ তদন্ত) মুলে কমিশনের চেয়ারম্যান এর নির্দেশে অনুসন্ধান করছে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ-২ তদন্ত সেলের উপ-পরিচালক মোঃ ফারুক আহমেদ।
৯ ভাই বোনের মধ্যে মুজাহিদ ও মাসুদ খুলনা বটিয়াঘাটা উপজেলার যুদ্ধাপরাধ মামলা নং ১৯/২০১১ এর ৩ ও ৪ নং এজাহারভুক্ত আসামি এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা তদন্তের জন্য আদালত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে প্রেরন করেন। উক্ত যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম জানান, উক্ত ৯ ভাই বোনের নামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ। তিনি আরো বলেন তাদের শত শত কোটি টাকার সম্পদ হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তারপরে তদন্ত করা উচিৎ, কেননা তারা সম্পদ হস্তান্তর করে সে টাকা দিয়ে সকল অভিযোগকে যেমন প্রভাবিত করতে পারে, তেমনি তারা অর্থ পাচার করে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারে। বাদী জানান, অভিযুক্ত ভাই বোনদের মধ্যে মারেজুল, ময়নুল, মাহেনুল ও মনিকা পারভিন এর নামে রয়েছে প্রায় ৪ শত কোটি টাকার সম্পদ। তারা ৪ জন ওয়েসিস কালার লিমিটেড, নুর ডিজাইন ও ডেভেলপার নামে দুটি কোম্পানির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোন নিয়েছেন, বাদি আরো বলেন, শুধু মারেজুলের নামেই টঙ্গী সাব রেজিস্ট্রার অফিসে রয়েছে প্রায় ৪০ টার মতো দলিল, তাছাড়া মোহাম্মদপুর মেট্রোপলিটন হাউজিং মিরপুর সনি সিনেমা হলের পার্শ্বে। টঙ্গী আউচপাড়ায় এবং দত্ত বাড়ী রোড়ে এবং নিজ গ্রাম লাবসায় রয়েছে কোটি টাকার অট্টালিকা। স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, মাত্র অল্প ক’বছরের মধ্যে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামী ও তাদের ভাই বোনদের শত শত কোটি টাকার সম্পদ হতবাক। এদিকে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামিদের ও তাদের ভাই বোনদের নামে উক্ত শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের যথাযথ তদন্তের জন্য বাদী কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন এর প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।
অন্যদিকে তাদের খুলনাপ্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামীদের বাড়ী সাতক্ষীরার যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামী আব্দুল খালেক মন্ডলের বাড়ীর পার্শ্বে হওয়ায় তার সহযোগী হিসেবে বৃহত্তর খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় গণহত্যার সাথী ছিলো আসামী মুজাহিদ ও মাসুদ। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামীদের বিশাল সম্পদের উৎস ও দুর্নীতির যথাযথ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’