নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে সাতক্ষীরা সদর ০২ আসনের আওয়ামী লীগের তৃণমূল সমর্থকরা। জাতীয় পার্টিকে সাতক্ষীরা সদর আসন ছেড়ে দেওয়া, জেলা আওয়ামী লীগ ও এর কয়েকটি অংগসহযোগী সংগঠনের নেতাদের দ্বিমুখী আচরণসহ দলীয় হেভীওয়েট পদধারীদের বিরুদ্ধাচরণই এর মূল কারণ।
তথ্যানুসন্ধানের জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটকে আওয়ামী লীগ ৩২টি আসন ছেড়ে দিয়েছে। যার একটি হলো সাতক্ষীরা সদর ২ আসন। দলীয় সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে এই আসনে ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবু তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। ফলে জোটের শরীক জাতীয় পার্টির আশরাফুজ্জামান আশু লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। অপরদিকে বিগত দুই বারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। সাতক্ষীরা সদরের ১৪টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে ইতোমধ্যেই ২৭জন ও প্রায় সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু দলীয় আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারণে হেভিওয়েট নেতাদের চাপের মুখে অনেকেই প্রকাশ্যে তা স্বীকার না করলেও গোপনে তার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছে যে জাতীয় পার্টির সাথে জোট নয়, সমন্বয় হয়েছে। আমরা শুধুমাত্র নৌকা প্রত্যাহার করেছি। এরপরও সাতক্ষীরা সদরের লাঙ্গল প্রতীকের আশরাফুজ্জামান আশুকে জোটের প্রার্থী ঘোষনা দিয়ে অতিউৎসাহী সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির আহবায়ক মোঃ মিজানুর রহমান, যুগ্ন আহবায়ক স.ম আব্দুস সাত্তার, যুগ্ন আহবায়ক কাজী নজরুল ইসলাম হিল্লোল, যুগ্ন আহবায়ক এস এম তানভীর হোসাইন সুজন স্বাক্ষরিত একটি পত্রে সাতক্ষীরা যুবলীগের সদর, পৌর ও সকল উপজেলা কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক-যুগ্ন আহবায়কে নিয়ে আগামী ২১ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে একটি বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত সভায় নৌকার প্রার্থী ও জোট ভুক্ত প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য করনীয় বিষয়ে আলোচনা করা হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদরের এক যুবলীগ নেতা জানান, ‘ওই সভা থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।’ অন্যদিকে গোপন একটি সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের তিনজন ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের দুইজন এবং যুবলীগের আহবায়ক কমিটির নেতারা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মীর মোস্তাক আহমেদ রবির পক্ষে কাজ করতে সদরের তৃণমূল আওয়ামী কর্মীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। এদিকে যুবলীগের আহবায়ক কমিটির বিতর্কিত এ কর্মকান্ডে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেছে, জেলা যুবলীগের আহবায়ক দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া নির্দেশনা কি মানেনা? সম্প্রতি, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে সমর্থন ও কাজ করা নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ একটি দৈনিকে বলেন, ভোট উৎসবমুখর করার জন্য দল সিদ্ধান্ত নিয়েই দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। জনপ্রিয় ব্যক্তিকে জনগণ বেছে নেবে তাতে কে হারল, কে জিতল, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ চিন্তিত নয়।
হেভিওয়েট নেতাদের হুমকিতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে তৃণমূল আ’লীগ
পূর্ববর্তী পোস্ট