আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সৌদি আরবে একটি ফার্নিচার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় ওবাইদুল ইসলামের (৩৩) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সংসারের অভাব ঘোচাতে ধারদেনা করে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় ওই কারখানায় আগুন লেগে ওবাইদুলসহ সাত বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ওবাইদুল ইসলাম নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত দবির উদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে। শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মা রাহেলা বিবি।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, অভাবী পরিবারে সাত ভাইবোনের মধ্যে ওবাইদুল ছিলেন সবার ছোট। সংসারের অভাব ঘোচাতে ধারদেনা করে ২০১৯ সালে সৌদি আরবে পাড়ি জমান তিনি। রিয়াদ থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরে হুফুফ শহরের একটি সোফা তৈরির কারখানায় কাজ শুরু করেন তিনি। সেই রোজগারের টাকা দেশে পাঠিয়ে ধারদেনা পরিশোধ করেছিলেন।
কয়েকদিন আগে তিনি মোবাইল ফোনে মা রাহেলা বিবির সঙ্গে শেষ কথা বলেন। তখন ওবাইদুল ভালো আছেন বলে জানিয়েছিল। কিন্তু শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে সৌদিতে ওবাইদুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর থেকে একটি কল আসে। সেখান থেকেই ওবাইদুলের মৃত্যুর খবর পান স্বজনরা।
নিহতের ফুফাতো ভাই ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, ২০১৯ সালে ওবাইদুল সৌদি আরবে যান। সবশেষ তিনদিন আগে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার কথা হয়। ওবাইদুলের মরদেহ দেশের আনার বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজিনা খাতুন জানান, তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছেন। পরিবারের সদস্যরা মরদেহ ফিরে পাওয়ার জন্য একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিয়াদ থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরে হুফুফ শহরের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি সোফা তৈরি কারখানায় লাগা আগুনে নয়জন কর্মী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে সাতজন বাংলাদেশি বলে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হয়েছে। বাকি দুইজন কোন দেশের তা জানা যায়নি।
নিহত বাংলাদেশিদের মরদেহ হুফুফ কিং ফাহাদ মর্গে সংরক্ষণ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।