নিজস্ব প্রতিবেদক: সুমনা ফাউন্ডেশন। একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী ও উন্নয়নমূলক সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটির সামাজিক কার্যক্রমে উপকৃত হচ্ছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম আর বেশি গতিশীল ও বিস্তৃত করার দাবী জানিয়েছে উপকারভোগী সহ অন্যান্যরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এবং এনজিও এ্যাফেয়ারস্ ব্যুরো থেকে প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধিত হয়ে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নানারকম সমাজউন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রদপ্ত নিবন্ধন নং সাত- ১২৫৭/২০১৬ এবং এনজিও এ্যাফেয়ারস প্রদত্ত নিবন্ধন নং ৩১২৪/২০১৭।
প্রতিষ্ঠানটির সাধারন সম্পাদক এ এস এম মাকছুদ খান জানান, সুমনা ফাউন্ডেশনের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হলো- “গ্রামীন অসহায় ও দরিদ্র মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, বর্ণ বৈষম্য, নারী পুরুষ বৈষম্য, শোষণ এবং অসমতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি, নারী, শিশু ও কিশোর, বেকার যুবকদের আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা তৈরী, উদ্যোক্তা তৈরী, পারিবারিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, মা ও শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান, প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা সৃষ্টি, বিনামূল্যে রক্তদান এবং করোনা আক্রান্তদের জন্য বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করা সহ অন্যান্য সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমভূক্ত।”
তিনি আর জানান, ২০১৬ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং ২০১৭ সালে এনজিও এ্যাফেয়ারস্ ব্যুরো থেকে প্রাপ্ত নিবন্ধন এবং সাতক্ষীরা জেলার সমাজসেবা কার্যালয়ের অনুমোদনের আলোকে এ প্রতিষ্ঠানটির কর্মএলাকা সমগ্র সাতক্ষীরা জেলা সহ বাংলাদেশের যেকোন এলাকা হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র সাতক্ষীরা জেলার মধ্যেই এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আগামীতে অন্যান্য জেলায়ও এর কার্যক্রম বিস্তৃত করার পরিরকল্পনা রয়েছে।
অত্র প্রতিষ্ঠানের অধীনে জেলার সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলায় “পারিবারিক সুরক্ষা প্রকল্প” নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নরে জন্য আশাশুনি সহ কয়েকটি উপজেলায় মাঠ জরিপ কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির “পারিবারিক সুরক্ষা প্রকল্প” পরিচালক সবুজ হোসেন জানান, আমরা বিভিন্নরকম সামাজিক সেবা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম করে থাকি। গ্রামের গরীব, দুঃখী, অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবা সহ অন্যান্য সেবা নিশ্চিত করা, বিভিন্ন ভাতা প্রাপ্তিতে সহায়তা করা সহ নানা উন্নয়নমূলক কাজে সরকারের পাশাপাশি আমরাও কাজ করছি। তিনি বলেন, মোবাইল সেবা কোম্পানি রবি’র সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠাপনের একটি সমঝোতা চুক্তি স¦াক্ষরিত আছে। উক্ত সমঝোতার আলোকে আমরা আমাদের উপকারভাগীর মাঝে বিনামূল্যে মোবাইলের এসএমই কর্পোরেট সিম দিয়ে থাকি। সিম গ্রহনের সময় গ্রাহককে ১৬০ টাকা রিচার্জ করতে হয়। তবে এই টাকা তারা মোবাইলের মাধ্যমে ফেরৎ পেয়ে থাকে। তারা এই টাকার সমপরিমান টক টাইম এবং ডেটা অফার সহ অন্যান্য মোবাইল সেবা পেয়ে থাকে, যার মূল্য ৫৯৯ টাকা। তাছাড়া সিম গ্রাহকরা ( তাদের প্রতিবন্ধি শিশুরা) প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে ১০০ টাকা হারে ফ্রি ভাতা ভাতা পাবে। প্রত্যেক গ্রাহক একািট করে স্বাস্থ্য সেবা কার্ড পাবে যার মাধ্যমে তারা শতকার ৪০ থেকে ৫০ ভাগ ছাড়ে চিকিৎসা সেবা পাবে। গাছের চারা সহ অন্যান্য সেবা পেয়ে থাকে। এছাড়া বিনামূল্যে গাছের চারা, অক্সিজেন সেবা সহ অন্যান্য সেবা পাবে।
উক্ত প্রকল্পের আশাশুনির সুপারভাইজার তানিয়া পারভীন বলেন, সুমনা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নানারকম সমাজউন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। আমরা মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি, বেকার যুবকদের আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা তৈরী, পারিবারিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, মা ও শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান, প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা সৃষ্টি, বিনামূল্যে রক্তদান এবং করোনা আক্রান্তদের জন্য বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করা সহ অন্যান্য সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাািক। ৯ আগস্ট সোমবারও আমরা আশাশুনির দক্ষিণ চাপড়া গ্রামের আবুল গাজীকে ফ্রি অক্রিজেন সেবা দেয়া হয়েছে।
এই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন গ্রাহক জানান, সুমনা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যে সব সেবা দেয়া হয় তা অন্য কোন সংস্থার পক্ষ থেকে তেমন দেয়া হয় না। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, করোনাকালীন অক্রিজেন সেবা, ফ্রি মোবাইল সিমের মাধ্যমে শিশুদের মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা ও বিনামূল্যে রক্তদান কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। এই প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত।