* এমপি রবির ঈগল প্রতীকের জনসভায় কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের নেতারা অংশ নেওয়ায় বল পেয়েছে ঈগল প্রতীকে সমর্থন কারী হুমকির মুখে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মীরা;
* লাঙ্গল প্রতীকের জনসভায় আসাদুজ্জামান বাবু, অধ্যাপক আবু আহমেদ ও মিজানুর রহমানসহকতিপয় নেতার বিষদোগার বক্তব্য ভালভাবে নিচ্ছে না সাধারণ ভোটাররা;
* লাঙ্গল প্রতীকের ভোট ব্যাংকে হানা দিচ্ছে ট্রাক প্রতীক
*ভোটের মাঠে অনুপস্থিত থাকতে বিএনপি-জামায়াতের জোর বার্তা;
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা ২ আসনে নির্বাচন জমে উঠেছে। দু’বারের নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী এমপি রবির ঈগল প্রতীকে সমর্থন হু হু করে বাড়ছে। পাশাপাশি তৃতীয় অবস্থানে থাকা ট্রাক প্রতীকের আফসার আলীরও সমর্থন বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে ঈগল প্রতীকের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে থাকা লাঙ্গল প্রতীক দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মনিটরিং সেলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি রবির ঈগল প্রতীকের জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার পর হুমকির মুখে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মীরা হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। ফলে লাঙ্গল প্রতীকের সমর্থনে অনুষ্ঠিত জনসভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপি রবিকে বিষোদগার করা শীর্ষ কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
আসন্ন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা ২ আসনে ঈগল, লাঙ্গল ও ট্রাকের জোর প্রচার প্রচারণা চলছে। নতুন মাঠে আসা ট্রাক প্রতীকের আফসার আলীর প্রচার প্রচারণা গ্রামে গঞ্জে চোখে পড়ার মতো। আফসার আলী ভোটের মাঠে দেদারছে খরচ করছে। ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে আফছার আলীর ভোট বাড়ছে। লাঙ্গল প্রতীকের পোস্টার-লিফলেট বিলি ও মাইকিং চলছে পুরোদমে।
আরও পড়ুন:
সদরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হয়েছে ব্যপক উন্নয়ন
দশ বছরে সদরে অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক ভবন
জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল তুঙ্গে
ভ্রুক্ষেপ না করেই কর্মীরা ঈগলে’র প্রচারে ব্যস্ত
লাঙ্গল প্রতীকের জনসভায় আসাদুজ্জামান বাবু, অধ্যাপক আবু আহমেদ ও মিজানুর রহমানসহ কতিপয় নেতার বিষদোগার বক্তব্য ভালভাবে নিচ্ছে না সাধারণ ভোটাররা। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি রবি নির্বাচনী জনসভা-পথসভায় হাজির হয়ে বলছেন আমি কারও বিরুদ্ধে কিছু বলতে আসিনি। বিগত ১০ বছর এই জনপদে মানুষের জন্য কাজ করেছি। তাদের কাছে দোয়া চাই। কাজের মূল্যায়ন হিসাবে ভোটও চাই। কারও বিরুদ্ধচারণ করা সভ্য মানুষের কাজ নয়। আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসাবে সহকর্মী আমার কোন ভাইয়ের বিরুদ্ধে বলা মানে দলীয় প্রধানের নির্দেশনা অমান্য করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করা যাবে না। এবারের নির্বাচনে তিনি ভোটযুদ্ধ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও উৎসাহীত করেছেন। এমপি রবির শালীন এসব কথাবার্তা সাধারণ ভোটররা ভালোভাবে নিচ্ছেন। পাশাপাশি এমপি রবিকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের দিকে তীর দিয়ে সাধারণ জনগন বলছেন আমরা সবাইকে চিনি। সদর আসনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাহার করায় প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সাধারণ ভোটাররা বিগত দু’বারের নৌকা প্রতীক পেয়ে জয়লাভ করা এমপি রবিকেই সমর্থন দিচ্ছেন।
পাশাপাশি আহলে হাদিস বাংলাদেশের ভোট ব্যাংক আছে এই আসনে। তারাও একচেটিয়া সমর্থন দিচ্ছেন ঈগল প্রতীকে। সব মিলিয়ে এই আসনের ভোট যুদ্ধে ঈগল প্রতীক বেশ এগিয়ে গেছে। ট্রাক প্রতীকের আফসার আলীও ভোটের মাঠে অর্থ ব্যয় করে অব্যাহতভাবে নিজের অবস্থান এগিয়ে নিচ্ছেন। ট্রাক প্রতীক যেসব ভোট টানছে তা প্রায় সব লাঙ্গল প্রতীকের ভোট ছিলো। ফলে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে লাঙ্গল প্রতীকের সমর্থন। শহরের কামাল নগরের লাঙ্গল প্রতীকের অফিস রাতারাতি ট্রাক প্রতীকের অফিসে রূপান্তর হয়ে গেছে। উপজেলা জুড়ে এরকম খবর আরও আছে। বিগত দু’বারে নৌকা প্রতীক পাওয়া এমপি রবির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যেসব চেনা মুখ বিরোধীতা করেছিলেন এবারও তারা এমপি রবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এসব চিহ্নিত আওয়ামী লীগ নেতারা লাঙ্গল প্রতীকের আশরাফুজ্জামান আশুকে সমর্থন করার জন্য গনহারে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। কারও বলছে রবিকে সমর্থন দিলে আগামী দিনে পদ হারাবা। আবার কাউকে বলছে লাঙ্গল প্রতীকে কাজ কর আগামীতে ভালো পদপদবী পাবে। গত ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্য ওয়াহিদুল ইসলাম খান সজিব ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী সভায় প্রকাশ্যে বলেছেন ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাদের জয়লাভের জন্য তাদের পাশে থেকে কাজ করতে এসেছি। সাতক্ষীরা ২ আসনে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঈগল প্রতীকের বিকল্প নেই।’ এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে হুমকির মুখে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা নড়েচড়ে বসে। তারা হুমকি এবং লোভ-লালসা উপেক্ষা করে এমপি রবির ঈগল প্রতীকে সমর্থন দিয়ে রাত দিন কাজ করছে। ফলে লাঙ্গল প্রতীকে সমর্থন করা আওয়ামী লীগের কতিপয় শীর্ষ নেতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
বিএনপি ও জামায়াত দলীয় ভাবে লিফলেট বিতরণ করে ভোটের মাঠে না আসার জন্য জেলাজুড়ে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ দুটি দলের ভাসমান ভোটারদের টার্গেট করেছিলো লাঙ্গল প্রতীকের কর্মীরা। বিএনপি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় বার্তা পেয়ে এই ফ্লোটিং ভোটও কেন্দ্রে আসছেনা তা প্রায় নিশ্চিত। ফলে লাঙ্গল প্রতীকের কর্মীরা হতাশার মধ্যে পড়েছে। ভোটের সমীকরণে লাঙ্গল এখানেও পিছিয়ে যাচ্ছে। যারা কোন দলের নয় অথচ ভোট দিতে যাবে এমন একটি বড় অংশ টাকা খরচ করে টেনে নিচ্ছে ট্রাক প্রতীকের আফসার আলী।