
সাতনদী অনলাইন ডেস্ক: কোমায় থাকা রোগী পান করেছেন ২০ বোতল মিনারেল ওয়াটার। তেমনটাই লেখা হয়েছে হাসপাতালের বিলে। বৃহস্পতিবার (১৫ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মহেশতলা এলাকায়।
অমরেন্দ্র পাল, অনেকদিন থেকেই ভেন্টিলেশনে আছেন। নাকে-মুখে নল ঢোকানে সেই মানুষটি নাকি ২০ বোতল মিনারেল ওয়াটার পান করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমনই একটি ভুতুড়ে বিল লিখেছে। সেই ভুতুড়ে বিল নিয়ে তার মেয়ে সুমিতা পাণ্ডা দ্বারস্থ হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের কাছে। সেই বিল পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের টাকা ফেরত দিতে বলেছে স্বাস্থ্য কমিশন।
গত বছরের জুলাই মাসে অমরেন্দ্র পালের ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাকে পশ্চিমবঙ্গের মহেশতলা এলাকার ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনা টেস্ট করালে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। প্রথম দিন থেকে অমরেন্দ্র পালকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়।
অমেরন্দ্র পালের মেয়ের প্রশ্ন, হাসপাতালে প্রবেশের পর থেকেই তার বাবাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সেখানে মিনারেল ওয়াটার খেত কীভাবে? টানা ১১ দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর গত ২২ জুলাই মারা যান অমরেন্দ্র পাল। কিন্তু চিকিৎসার বিল দিতে গিয়েই তার পরিবারের সবাই অবাক। ১১ দিনের বিল হয়েছে ৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
বিল নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের দ্বারস্থ হন সুমিতা। সেই বিল খতিয়ে দেখতে গিয়েই অবাক হন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের সদস্যরা। বিলে ২০ বোতল মিনারেল ওয়াটেরে দাম ধরা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যয় ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনকে জানান, ভেন্টিলেশনের রোগী মিনারেল ওয়াটার খেলেন কী করে? তার কোনো জবাব দিতে পারেনি ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও বিলের একাধিক জায়গায় অসঙ্গতি পেয়েছে কমিশন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, বিল আমরা খতিয়ে দেখেছি। অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিগুণ টাকা নেওয়া হয়েছে। অমরেন্দ্র পালের সামান্য লিভার ফাংশন টেস্টের জন্য ২ হাজার ৬২০ টাকা নিয়েছে হাসপাতাল। অথচ বাইরে ওই একই টেস্ট করাতে মাত্র ৭০০ টাকা নেওয়া হয়। রেমডিসেভির মেডিসিনের দাম ভারতের বাজারে ৪ হাজার টাকা হলেও রোগীর থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে বেসরকারি ওই হাসপাতালকে মূল বিল থেকে ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য কমিশন।