জাতীয় ডেস্ক:
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আদালতগুলোতে অনেক মামলা জমে গেছে। যেভাবেই হোক এই মামলা জট কমাতেই হবে। আমরা যদি মামলা দায়েরের চেয়ে মামলা নিষ্পত্তির পরিমাণ বাড়াতে পারি তাহলে আগামী ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে এই মামলা জট অনেকাংশেই থাকবে না।
বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়কুঞ্জ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি। সেই ইতিহাস সবাই জানেন। আমরা যদি এভাবে একটি ভূখণ্ড স্বাধীন করতে পারি, তাহলে মামলা জট কেন কমাতে পারব না।
তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। রাষ্ট্রের তিনটি অর্গানের মধ্যে একটি হচ্ছে জুডিশিয়ারি। এটি একটি শক্তিশালী অর্গান। আমরা যারা এই বিভাগে আছি বিচারক, আইনজীবী, আইনজীবীর সহকারী এবং বিচারিক আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে এ দেশের মানুষের বিচারিক সেবা নিশ্চিত করা।
বিচারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখন যত সংখ্যক কেইস ফাইলিং হচ্ছে তার থেকে নিষ্পত্তি যাতে বেশি হয়। ১০০টি কেইস ফাইলিং হলে যদি ১২৫টি নিষ্পত্তি হয় তাহলে ৫/৬ বছরের মধ্যে মামলা জট কমে আসবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের আদালতগুলোতে জমে থাকা মামলা জট যেভাবেই হোক ছাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে বিচারিক সেবা পেতে এই দেশের মানুষের হক রয়েছে। সেখান থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা যাবে না। আমরা পরিশ্রম করে রক্ত দিয়ে ১৯৭১ সালে এই দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা যদি এভাবে এই ভূখণ্ডকে স্বাধীন করতে পারি তাহলে কেন এই মামলা জটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীন হতে পারব না। ইনশাআল্লাহ আমরা জয়ী হব। এই জয়টা আমরা পরিশ্রম করে করতে চাই। আদালতের বারান্দায় মাসের পর মাস বছরের পর বছর বিচার পাওয়ার জন্য মানুষকে আর ঘুরতে হবে না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এই ন্যায়কুঞ্জ তাদের জন্য, যারা এখানে বিচার পেতে আসেন তাদের বিশ্রাম নেয়ার জন্য। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। আমরা সারা দেশের আদালতগুলোতে এই ধরনের ন্যায়কুঞ্জ স্থাপন করছি।
এর আগে প্রধান বিচারপতি আদালতে এলে স্বাগত জানান ঢাকার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া, মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাশফিকুল ইসলাম ও ঢাকার বিচার বিভাগীয় অন্যান্য কর্মকর্তারা।
এসময় প্রধান বিচারপতির সফরসঙ্গী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, আপিল বিভাগের রেজিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার (বিচার) এসকে এম তোফায়েল হাসান। এর আগে প্রধান বিচারপতি জেলা জজ আদালত ভবনের পাশে তিনটি গাছ রোপন করেন।