মাতৃবোধে তোমার অনন্য মানবতা
থামিয়ে দেয় ছোট ছোট দুঃখ ব্যথা
তোমার ছোট পৃথিবীটাকে গড়ে তুলেছো
নিজের জীবন বাজি রেখে আনন্দ কুসুম।
বাঙালির ঘরে কন্যা সন্তান একদা
ছিল অযাচিত অতিথির অনধিকার
আগমন। সেই জন্ম থেকে জ্বলতে জ্বলতে
নিষ্ঠুর পারিবারিক স্বৈরাচার কখনোই
মুক্তির দরজা সহসা দেয়নি খুলে।
বাংলার গ্রাম শুধু ছিলনা সবুজের বিছানা
জীবনের প্রথম পদক্ষেপে ঝরে পড়তো
রক্তঘাম। গঞ্জনা বঞ্চনা যন্ত্রণা; অনন্ত
আঁধারে একদিন ঠিকানা বিহীন করুণ
প্রস্থান।
খুব কম ভাগ্যবতীরা ছিলেন যাদের
সোনার চামচ লোহার গারদে বন্ধন দশায়
যায়নি হারিয়ে। মৃত্যুর আগেই আরেক মৃতু্
সবকিছু কেড়ে নিত জীবনের অধিকার।
আজও তার আছে রেশ
কোথাও কোথাও সীমানা ছাড়িয়ে
ধরেছে নতুন বেশ।
জন্মস্থানে যাদের আজন্ম অধিকার
ছিনিয়ে নেয় নিষ্ঠুর নিয়মের ছোবল
তাদেরই নতুন করে মানিযে নিতে হয়
এক অজানা অচেনা কারাগার ভয়ংকর।
এভাবেই জীবন যন্ত্রণার রক্তাক্ত ঘাসমাঠে
পৃথিবীর একপ্রান্তে আনন্দ বেদনার
পূর্ণিমা অমাবস্যার আলো-আধাঁরির
উজলা রাতে স্বপ্ন ভাঙার গান শোনে।
পিতৃহারা এক কিশোরী
মা আর মাতৃভূমির আচঁল ছিঁড়ে
হৃদয় ব্যথিত বেদনা বয়ে
দক্ষিণ থেকে পশ্চিমে তোমার আগমন
দুঃখ ভাঙার খেলায় মাতা
এক অবলার অশ্রু ভেজা জীবন সংগ্রাম।
তখন এক সময় ছিল কঠিন ভীষন
ভাঙা-গড়ার বিচিত্র জ্যামিতি
ভেঙে পড়তো ত্রিভুজের সহজ হিসাব
তবুও তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে
সুস্থির অবিচল এক বর্গক্ষেত্র।
তোমার নতুন জীবন
তুমি নিজেই গড়ে তুলেছিলে
ভালোবাসার কর্মমূখর
এক বিচিত্র সংসার।
বাংলার নারীর নিরবচ্ছিন্ন আনন্দ জীবন
স্বপ্নের খেলাঘর
পাখিডাকা ভোরে যার নিশ্চিত নিয়তি
নববধু ছুটে যায় কলসি কাঁকে
তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে রাধিকার গোপী।
এ অনেক প্রাচীন কথন
তবুও ঘরে ঘরে করুণ ক্রন্দন
কান্নার রোল শুনে দাঁড়িয়ে যায়
নিষ্ঠুর নিশাচর খুনী।
সকলকে সাম্যের উদারতায়
অভিষিক্ত করার এক অনুপম
বোধ তোমাকে শুনিয়েছিল
মানবতার বৈচিত্রময় জীবন সংগীত।
তোমার আপন পৃথিবীতে যারা
দুঃখ-দৈন্য দারিদ্র্য পীড়িত
তাদের আশ্রয় তুমি
বটবৃক্ষের ছায়া সুশীতল স্পর্শ
তাদের ভিজে চোখ শুখিয়ে দেও
অকুন্ঠচিত্তে মায়ের মমতায়
মুগ্ধ করো নিজেই নিজেকে।
ভঙ্গুর মধ্যবিত্তের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে
পরিচ্ছন্ন গৃহস্থাপনা এ যেন সাহস করে
স্বপ্ন দেখা। সীমাহীন মানষিক দৃঢ়তায়
থাক তুমি অবিচল। তোমার স্বপ্নের সন্ধ্যায়
সকলকে নিয়ে পৌঁছে যাও
যার যার দিগন্তের কাছাকাছি।