
আহাদুর রহমান: বড় গাড়ি ঢুকলে যানজট বা রাস্তার ক্ষতি হয় এমন চিন্তা থেকে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের (সিএন্ডবি মোড়, মহিলা মাদ্রাসা রোড) পার্শ্ব রাস্তার ওপর একটি ব্যারিকেড দেওয়া হয় যেন বড় বা ভারী যানবাহন ঢুকতে না পারে। রাস্তার উপকার হলেও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ওই এলাকায় বসবাসকারী মানুষের।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন আগে সাতক্ষীরা পৌরসভার পক্ষ থেকে ৭নং ওয়ার্ডে ঢুকার এই রাস্তার উপর ব্যারিকেড স্থাপন করা হয়। ব্যারিকেড স্থাপনের পর এই এলাকার মানুষের মধ্যে অন্যরকম সংকট তৈরি হয়। এই এলাকার অনেকে ঘর ভাড়া দিয়ে থাকে। সেই সাথে বেশ কয়েকটি বড় বড় কোম্পানির ডিলার ও ছোট বড় প্রতিষ্ঠানও আছে। আর প্রত্যেকের নির্মাণ সামগ্রী আনা নেওয়াতো আছেই। কিন্তু এ সমস্ত কিছুর জন্য এই এলাকার রাস্তাতে ছোটবড় ট্রাক ঢুকানোর দরকার পড়ে। কিন্তু ব্যারিকেডটি থাকায় সেসব পন্য সামগ্রী ঢুকাতে সমস্যার তৈরি হয়। ফলে ভ্যানে বা অন্য উপায়ে এসব পন্য ভেতরে নিতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায় স্থানীয়দের। স্থানীয়দের অভিযোগ বারবার জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েও আমলে নেননি তারা।
একই এলাকার মোজাম্মেল হোসেন কোমল পানীয়র পরিবেশক। আগে প্রতিষ্ঠানের সামনেই মালামাল আনলোড করতেন। কিন্তু এখন প্রধান সড়ক থেকে মালামাল আনলোড করতে গিয়ে বাড়তি খরচ করতে হয়। কোমল পানীয়র নির্দিষ্ট দাম থাকায় এই বাড়তি খরচ মোজাম্মেল হোসেনের রুজিরুটিতে ভাগ বসাচ্ছে।
স্থানীয় আবুল কালাম জানান, তার ছেলে বাড়ি নির্মান করছে। কিন্তু এই ব্যারিকেডটি থাকায় ইট, বালি ভেতরে নিয়ে যেতে বাড়তি টাকা গুনতে যেয়ে সঞ্চয়ে টান পড়েছে। কষ্টের টাকা জমিয়ে বাড়ি করছেন। কয়েক হাজার বাড়তি ভ্যান ভাড়া হিসাবে ধরা ছিলনা।
সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুনছুর আলী সাতনদীকে জানান, ব্যারিকেডটি থাকায় স্থানীয়দের অসুবিধাই বেশি হচ্ছে। এখানকার সাধারণ মানুষ ঘর-বাড়ি করতে ইট, বালি নিতে গেলে বাড়তি খরচ করতে হয়। যারা বাসা ভাড়া দেন তাদেরও সমস্যা। কারণ ভাড়াটিয়ারা মালামাল ভেতরে নিতে সমস্যায় পড়েন বিধায় এখানে সহজে বাসা ভাড়া নিতে চাননা। আবার বেশ কয়েকটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানও আছে এখানে। তাদেরও পন্যবাহি ট্রাক রাস্তায় আনলোড করে ভেতরে পন্য পৌছানোর জন্য বাড়তি অর্থের সাথে সাথে বেশ ভোগান্তিও পোহাতে হয়। এই ব্যারিকেডটি অপসারন হলে স্থানীয়দের জন্য উপকারই হবে।
সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, ‘এই ব্যারিকেডটি অপসারন করা জরুরী। স্থানীয়রা এটির জন্য কষ্ট পাচ্ছে।’
পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুর রশিদ জানান, ‘আমি ৭নং ওয়ার্ডে বসবাস করি। এই ওয়ার্ডে আরো ৭টি সংযোগ সড়ক আছে। কোনটিতেই এরকম প্রতিবন্ধকতা নেই। আর পুরো ওয়ার্ডের মধ্যে এই মহিলা মাদ্রাসা রোডেই ভাড়াটিয়া বেশি। সেই সাথে আছে অনেকগুলো বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ব্যারিকেডটি অপসারণ সময়ে দাবী।’
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে মাদ্রাসা রোডে বসবাসকারীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে এই ব্যারিকেডটি অপসারণ করার দাবী তুলেছেন স্থানীয়রা।