মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে: এমপি রবি
জনগণ আবারও শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন: নজরুল ইসলাম
রুবেল হোসেন: ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবাষির্কী পালন করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল ৫ টায় শহরের নারকেলতলা থেকে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহণে একটি আনন্দ র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাতক্ষীরা নিউ মার্কেট চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য এ.কে ফজলুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাতক্ষীরা ২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এসময় তিনি বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাতক্ষীরা ২ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। শুক্রবার (২৩ জুন) বিকাল ৫ টায় সাতক্ষীরা নিউমার্কেটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে একথা বলেন তিনি। সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এশিয়ার সর্ববৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে ৭০ এর নির্বাচনে জয়লাভ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। ঐ পাকিস্তানী সামরিক জান্তা সেদিন বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা দেয় নি। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করি। এই লড়াইয়ে ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দেয়। ২ লক্ষ মা বোন তাদের সম্ভ্রম দেয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই দেশ পাওয়া। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যে জাতীয় চার নেতা অস্থায়ী সরকার দেশ পরিচালনা করেন জেলখানায় তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর পরে আপনারা দেখেছেন বি.এনপি -জামায়াত যারা এখন বড় বড় কথা বলছে তারা একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের নেত্রী আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সহ গোটা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। বঙ¦বন্ধু হত্যার ৬ বছর পর আমাদের নেত্রী দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। ১৯৯৬ সালে আমরা নির্বাচনে জয়লাভ করলেও বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারি নি। ৫ বছরের মাথায় ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেও ক্ষমতায় যেতে পারি নি। তখন ছিল দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। তারপর আবার আন্দোলন সংগ্রাম করে ২০০৮ এর নির্বাচনের ভয়লাভের পরে আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন।” দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশ আজকে কোথায় গিয়েছে? মানুষ এখন অনেক শান্তিতে আছে।” বি.এন.পি-জামায়াতের নৈরাজ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল তারা আমাদরে ৩৩ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আজকের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমি বলতে চাই ঐ স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামায়াত আর কখনো যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেই ব্যবস্থায় জনগণকে করতে হবে। ওরা আবারও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিদেশীদের ক্ষেপিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। ২০২৪ সালের জানুয়ারীতে ইলেকশন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করবো এবং আমরা জিতব ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় যাবে এবং আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন।’ র্যাবের উপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমেরিকা আমাদের দেশের বিভিন্ন সংস্থার উপর স্যাংসন দেয়। আমেরিকা কে? আমাদের দেশ আমরা পরিচালনা করবো। আমাদের দেশ কিভাবে চলবে না চলবে আমাদের সরকার ঠিক করবে, আমাদের জনগণ ঠিক করবে, আমেরিকা নয়। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে পরাস্থ করার জন্য তারা সপ্তম নৌবহর প্রেরণ করে। পরে পরাজয়ের সম্ভাবনায় তারা ফিরে যায়। এমনিভাবে আমেরিকা নানাবিধ পন্থায় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। তারা আমাদের বন্ধু, বন্ধু হিসাবে তারা সবসময় আমাদের পাশে থাকবে। বাংলাদ্যেশ এমন একটি জায়গায় অবস্থিত যে বাংলাদেশ কারো কাছে মাথা নত করতে চায় না। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে এগিয়ে যাব।” দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সারা দেশে অভূতফূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু এখন বিশ্বের বিষ্ময়। পুরা এশিয়ায় কোথায় পানির তলদেশে রাস্তা হয় নি বাংলাদেশে হয়েছে। মেট্রোরেল আগামী অক্টোবর নাগাদ আরো বিস্তৃত হবে।” সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা ধর্মের নামে রাজনীতি করে, যারা ধর্মের নামে অতীতে রাজনীতি করেছে, আমাদের এলাকাকে উচ্ছৃঙ্খল করেছে এবং জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে। আমরা জামায়াতকে প্রতিহত করবো।” বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জীবন বাজি রেখে হলেও শেখ হাসিনাকে ৫ম বারের মত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম। শুক্রবার (২৩ জুন) বিকাল ৫ টায় সাতক্ষীরা নিউমার্কেটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে একথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গৌরবজ্জল ইতিহাস তুলে ধরে সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে এক আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথান এবং ৭০ সালের নির্বাচন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সফল করে। ৭০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করার পরেও পাকিস্থানী শাসক গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় যেতে দেয় নি। তারা বাঙালীদের ক্ষমতায় যেতে দিবে না বলে বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করেছিলেন। এরকম পরিস্থিতিতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ বলার মধ্য দিয়ে কার্যত মুক্তিযুদ্ধের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আমাদের প¦ার্শবর্তী দেশ ভারত প্রায় ১ কোটি শরনার্থীকে আশ্রয় সহ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল। ৭৫ এ স্ব পরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর আওয়ামী লীগ বিপর্যয়ের সম্মুখিন হলেও ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে সারাদেশে অভূতপূর্ণ উন্নয়ন সাধন করেছেন।” জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ বছরের ডিসেম্বরে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের কে আমাদের জীবন বাজি রেখে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের সাধ্যমত নৌকার বিজয় নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবো। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ম বারের মত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণ করবো।” সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. আজহারুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, যুবলীগ নেতা এ্যাড. শেখ তামিম আহমেদ সোহাগ, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোৎস্না আরা, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এসময় বক্তারা আওয়ামী লীগের গৌরবউজ্জল সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের সকল পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহবান জানান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র রূখতে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকারও নির্দেশনা দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে।