
আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে: সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনে বনদস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে, জেলে সূত্রে জানা গেছে এ পর্যন্ত মোট ৩১ জন জেলে অপহরনের শিকার হয়েছে। বনদস্যুর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কালিঞ্চী থেকে নামলো ৩জন।
জানা গেছে যে, সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনের একেবারেই লোকালয়ের গাঁ ঘেসে জেলেদেরকে অপহরণ করছে বনদস্যুরা। তবে লোকালয়ের পাশে সুন্দরবন থেকে জেলেদের অপহরনের ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বহু জেলে জানিয়েছেন, সুন্দরবনে ইতি মধ্যে ২টি বনদস্যু বাহিনী আমাদের অপহরণ করছে। তার মধ্যে একটি জিয়া বাহিনী ও অপরটির কোন নাম পাওয়া যায়নি। তবে নাম না পাওয়া বনদস্যুদের মধ্যে দেখাগেছে শ্যামনগর উপজেলার গোলাখালী গ্রামের ছেয়ামউদ্দীন মোল¬্যার পুত্র মেকাইল, কালিঞ্চী গ্রামের আরশাদ শেখের পুত্র হযরত শেখ ও মতিয়ারের পুত্র ফারুক। তবে এরা বিকাশের এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে খুশিমত মুক্তিপন আদায় করছে।
এই দুই বনদস্যু বাহিনীর হাতে এই পর্যন্ত আলাদা আলাদা ভাবে মোট ৩১ জন জেলে অপহরন হয়েছে এবং সেই সাথে আটকে রেখেছে বেশ কয়েকটি নৌকাও।
বেশ কয়েক দিন আগে ফিরে আসা একজন জেলে বলেন, আমরা তিন জন ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়ে ফিরে এসেছি। আমাদের উপর চরম অত্যাচার করেছে। আমি এখন কানে কিছু শুনতে পারছি না এবং রাতে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করে। হইতো ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতে হবে।
বর্তমানে মামুন্দো নদীর বড় বৈগীরি, ম্যাটভাঙ্গা, ছোট বৈগীরি, চুনকুঁড়ি ও কালুন্দী নদীর কছুখালী, হোগল ডোগোর, দারগাং স্থানে তারা পায়তারা শুরু করেছে। ভারত সীমান্তে বসে নজর রেখে দ্রুতগতিতে জেলেদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করে আবারও দ্রুত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমশের নগর এলাকার সুন্দরবনের ঝাড়া নামক স্থানে। তবে জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে চালাচ্ছে চরম অত্যাচার।
একটায় প্রশ্ন জেলেদের মনে গেথে বসেছে ! অর্থে লেনদেনের বিষয়ে সহযোগীতা নিচ্ছে মোবাইল বিকাশ একাউন্টের। ছিম কর্তৃকপক্ষ প্রতিটি ছিম রেজিট্রেশনের মাধ্যমে বাজারে ছেড়েছে কিন্তু এই ছিম গুলো কি ভাবে তারা ব্যাবহার করছে ?
বনদস্যু জিয়াবাহিনীর ২টি নৌকাতে মাত্র ২জন করে মোট ৪ জন সদস্য আছে। তার মধ্যে বনদস্যু বাহিনীর প্রধান জিয়া ও র্যাবের স্যালেন্ডারকৃত আসামী বুলবুল তাদের বাড়ী উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে বর্তমানে ভারতের ক্যানিং এ বসাবস করে। তাদের কাছে ১ টি ডাবল ব্যারেল, ১ টি সিঙ্গেল ব্যরেলের বন্দুক, ১টি ইয়ারগান ও একটি হাতে তৈরি দেশীয় অস্ত্র। এবং অন্য নাম না জানা বাহিনীতে ৫ জন সদস্য তাদের কাছে ৩ টি হাতে তৈরি অস্ত্র আছে।
তবে গোলাখালী গ্রামের ছেয়ামউদ্দীন মোল¬্যার পুত্র মেকাইল, কালিঞ্চী গ্রামের আরশাদ শেখের পুত্র হযরত শেখ ও মতিয়ারের পুত্র ফারুকের বিষয়ে এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে যে, মেকাইল ও হযরত দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসাবস করে আসছে এবং ফারুক এলাকায় ঘোরাঘোরি করতে করতে এখন আর তাকে দেখা যায় না।