জাতীয় ডেস্ক:
পাহাড়ি ঢলে বেড়ে যাওয়া তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরছে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তার তীরবর্তী পানিবন্দি মানুষদের মধ্যে।
শনিবার (১৬ জুলাই) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড হয়েছে ৫২ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পানি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস আছে।
এর আগে ১২ জুলাই থেকে অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়েছিল। যা সাম্প্রতিক সময়ের সব থেকে বেশি পানি উচ্চতা। ফলে জেলার ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝারসিংহেসর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়িসহ বেশ কয়েকটি চর প্লাবিত হয়। ফলে নদীগর্ভে থাকা শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
গবাদি পশুসহ ঘরবাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়ে এসব মানুষ। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পরিবারগুলো। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক করছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে পানি কমতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে তিস্তাপাড়ে।
জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি চরের বাসিন্দা রুমি আক্তার বলেন, পানি কদিন থেকে হাঁটু সমান হয়েছিল। গরু-ছাগল নিয়ে যন্ত্রণার শেষ নাই। রাত থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।
ডিমলা টেপাখড়িবাড়ি নদী গর্ভের বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, পানি বাড়লেই আমরা আশ্রয়হীন হয়ে যাই। কী করার দুঃখের কপাল। কদিন একেবারে নিশ্বাস বন্ধ হওয়া অবস্থা। আজ তো পানি কমছে। আল্লাহ যেন আর না বাড়ায়। দুদিন থেকে রান্না হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সফিয়ার রহমান বলেন, পানি তো কমছে। কিন্তু কমলেই ভাঙন দেখা দেবে। এতে সব থেকে বড় ক্ষতিটা হবে অনেক জমি নদীতে চলে যাবে। উপজেলা থেকে তালিকা করতে বলছে সেই কাজই করছি। এখন কিছুটা স্বস্তি আছে।
পূর্বছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, বরাদ্দ এখনো হাতে পাইনি৷ আমাদের তালিকা করতে বলেছে, সে তালিকা আমরা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে বিতরণ করা হবে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ২০ টন ত্রাণ বরাদ্দ হয়েছে৷ আমরা জেলায় আরও ত্রাণের জন্য আবেদন করেছি। হয়তো ৫০ টন চাল পেতে পারি। পেলে সেটিও বরাদ্দ দেওয়া হবে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাশেদীন বলেন, পানি কমতে শুরু করেছে। সারাদিন কমলেও রাতে একটু বাড়তে পারে। কিন্তু তা আবারও কমে যাবে।