সাতনদী ডেস্ক: সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক রেজাউল করিম মিঠু। শনিবার ফ্রান্সের স্থানীয় সময় রাত ২৩টা ১৫ মিনিটে ডাক্তার তার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন। ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৮ বছর। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত ও ১২ বছর ও সাড়ে ৩ বছর বয়সী দুই কন্যা সন্তানের পিতা। সাংবাদিক রেজাউল করিম মিঠু ২০০১ সালে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর সাপ্তাহিক ঝড়, দৈনিক দৃষ্টিপাত, দৈনিক কালের চিত্র, দৈনিক সাতনদী, দৈনিক রাজপথের দাবি, দৈনিক জন্মভূমিসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ফ্রান্সে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি দৈনিক সাতনদী পত্রিকায় মফস্বল বার্তা সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা করতেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের কাউন্সিলরও ছিলেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি স্টুডিও ব্যবসা করতেন। এছাড়া ভাগান্বেষণে তিনি সুদূর ফ্রান্সে যান। সেখানে কয়েক মাস যেতেই তিনি হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হন। দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় তিনি সেখানে অসুস্থ থাকার পর অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেছেন। তার মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার বাড়িতে বিরাজ করছে পাথরের নীরবতা। অবুঝ দুই কন্যা শিশু, স্ত্রী আর বৃদ্ধা মাতাসহ ভাই-বোনদের কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। সহকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে শোকের মাতম। একজন দক্ষ সংগঠক ও সংবাদকর্মী এমআর মিঠুর মৃত্যুতে দৈনিক সাতনদী পরিবারের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ঈদ-উল ফিতরের ২ দিন পর গত ২৪ এপ্রিল বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্যারিসের ঝধরহঃ ঙঁবহ তে অবস্থিত ঐড়ঢ়রঃধষ ইরপযধঃ @ গবফরপধষ ঈড়ষষবমব হসপিটালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। ডাক্তাররা তাকে জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউতে স্থানান্তর করে এবং লাইফ সাপোর্ট মেশিনের মাধ্যমে তার হার্ট সচল রাখা হয়। ডাক্তার জানিয়েছিলেন, তার হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। তবে, বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অপার মহিমায় দীর্ঘ ১৮ দিন পর গত ১০ মে তার জ্ঞান ফেরে। চোখ মেলে তাকায় সে। ধীরে ধীরে কিছুটা উন্নতির দিকে যায় সে। খুলে ফেলা হয় লাইফ সাপোর্ট মেশিন। গত ১৩ ও ১৪ই মে সে আমাদের সঙ্গে কথাও বলে মোটামুটি ভালোভাবে। যদিও ডাক্তারেরা আমাদের জানাচ্ছিলেন, তার অবস্থা তখনও আশঙ্কামুক্ত নয়। গত ১৫ মে ২০২৩ (সোমবার) সকালে ডাক্তার জানান, তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতি হচ্ছে এবং আমাদের হসপিটালে যেতে বলা হয়। যেয়ে দেখি তাকে আবারও লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়েছে এবং তার সেন্সও নাই। ডাক্তার জানালেন, তার হার্ট ফাংশন করছে না, তাই, আবারও হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হার্ট খুঁজছেন। এরপর, গত ২৭ মে বিকেলে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ ফোন করে দ্রুত হসপিটালে যেতে বলেন। যেয়ে দেখি তার অবস্থা একেবারে খারাপ। এ দিন তার হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট/ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে তার অবস্থার অবনতির দিকে। ডাক্তার জানালেন, ক্লিনিক্যালি ডেড। এরপর ১১টা ১৫ মিনিটে লাইফ সাপোর্ট মেশিন খুলে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর পর তার লাশ দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে নিয়ে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।