নিজস্ব প্রতিবেদক: আশাশুনি উপজেলার কোদন্ডা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুখিরাম ঢালী তার দায়িত্বে বহাল হয়েছেন। ফলে স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে। স্কুলের এসএমসি সভাপতি সরোয়ার হোসেন, কমিটির সকল সদস্য, সহকারী প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার মন্ডল, সহকারী শিক্ষক আবু মুছা, কৃষি শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ অন্য শিক্ষকমন্ডলী, ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ও ভিকটিমের সহপাঠী মিনারা সহ অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারা সবাই অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষী শাস্তি পাক এমন মত পোষণ করেন। আবার অভিযোগকারীর পূর্বাপর কিছু ঘটনার উল্লেখ করে বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্তের দাবী তোলেন। তাদের কথার সূত্র ধরে একদল সাংবাদিক অভিযোগকারীর পূর্বের স্কুল শ্রীউলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গমন করেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন কুমার গাইন, অভিযোগকারীর তৎকালীন শ্রেণি শিক্ষক (৭ম শ্রেণি) মোঃ সাইফুল্লাহ, তৎকালীন আরেক শ্রেণি শিক্ষক (৮ম শ্রেণি) শাহিদা আক্তার, অফিস সহায়ক কাম শিক্ষক আছাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, তার আচার আচরণ ভাল ছিল না। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন। তার পিতাকে বারবার বলা হলেও সংশোধন হয়নি। ৭ম শ্রেণিতে পড়াকালীন একদিন ১ম প্রিয়ড করে সে উধাও হয়ে যায়। পরবর্তীতে পাশ্ববর্তী চান্দুলিয়ায় এক ইটের ভাটায় স্কুল ড্রেজ পড়া মেয়ের সাথে কাশিমারীর দু’টি ছেলেকে সন্দেহজনক ঘুরতে দেখে সেখানকার লোকজন স্কুলে ফোন দেয়। কয়েক শিক্ষক সেখানে যাওয়ার পূর্বেই ছেলেরা পালাতে সক্ষম হলে ছাত্রীকে উদ্ধার করে স্কুলে আনা হয়। ঘটনার জন্য তার পিতাকে কঠোর ভাবে সতর্ক করা হয়। সে একবার এক ছেলের বিরুদ্ধে অনৈতিক অভিযোগ করে। তাদেরকে মুখোমুখি করার পর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এসব ঘটনার পর কমিটি, শিক্ষকমন্ডলী ও সচেতন অভিভাবকরা স্কুলের পরিবেশ নষ্ট না হয় সেজন্য তাকে স্কুলে না রাখতে মতামত ব্যক্ত করেন। পরে জানতে পারি তাকে কোদন্ডা স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। স্কুলের অভিভাবক আব্দুল আলীম তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত অভিযোগের বর্ণনা দেন। এ ব্যাপারে তারাও যথাযথ তদন্তপূর্বক অপরাধীর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ছুটি নেওয়ায় অনুপস্থিতির সময়ে স্কুলের স্বাভাবিক যৌলুসে ভাটা পড়ে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কমিটির সদস্যদের মনে পীড়াদায়ক পরিস্থিতি আঘাত হানে। ফলে সকল কাজে কেমন যেন শূন্যতা বিরাজ করতে থাকে। অবশেষ প্রধান শিক্ষক মাহামান্য হাই কোর্টে আগাম জামিন আবেদন করলে মাহামান্য আদালত (বিচারপতি শেখ মোঃ জাকির হোসেন ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল) ৬ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। তিনি বর্তমানে স্কুলে যোগদান করায় স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জনৈক স্কুল ছাত্রী ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধনী ২০০৩) আইনের ১০ ধারায় অভিযোগ রুজু করে। মামলা নং ১৭ তাং ১৭/০৫/২২, যার জিআর মামলা নং ১১৬/২২। মামলা রুজু হলে স্কুলের শিক্ষকমন্ডলী, এসএমসি সভাপতিসহ সদস্যবৃন্দ, শিক্ষার্থী, অভিভাবকবৃন্দের বড় অংশ ঘটনা পরম্পরা ও উদ্ভুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা পূর্বক অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনরূপ অনৈতিক ও সন্দেহযুক্ত আচরণে ত্রæটির কথা অস্বীকার করেন। তারা ঘটনাটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তবে ভিকটিম ও তার মামারা সহ দু’একজন ভিন্ন পরিসরে অভিযোগের পক্ষে কথা বলেন।