
পাকিস্তানই এই অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করতে পারে এ কথা বলা হলে বঙ্গবন্ধু বলেন, ওরা কারা? অপরাধ করেছে বাংলাদেশে, পাকিস্তানে নয়। বাঙালিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমার লোকদের পাকিস্তানের অবিলম্বে ফেরত দেওয়া উচিত। বিহারিদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিহারিদের হত্যা করা হচ্ছে বলে পাকিস্তানে প্রচার করা হচ্ছে। তাদের জন্য এত দরদ থাকলে বাংলাদেশ থেকে তাদের নিয়ে যায় না কেন?
তিনি বলেন, রাজনীতি নিয়ে ভুট্টোর আর খেলা করা উচিত নয়। পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিলে কার কি এসে যায়। তিনি যদি অন্ধকারে থাকতে চান তাহলে আমি কি করতে পারি।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমি জানি আন্তর্জাতিক স্বার্থান্বেষী মহলের সাহায্যপুষ্ট একশ্রেণির লোক ভারতের বিরুদ্ধে কানাঘুষা করছে কিন্তু তারা আমাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারবে না। ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেন, এটা একটি চুক্তি। বহু দেশে এ ধরনের চুক্তি রয়েছে, এটা কারও বিরুদ্ধে নয়।
ইজারাদারি প্রথার অবসান
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার হাট বাজারের ইজারাদারি প্রথার অবসান ঘোষণা করেন। ১৯৭২ সালের ২৬ এপ্রিল সরকারের ভূমি প্রশাসন ভূমি সংস্কার ও ভূমি রাজস্ব মন্ত্রণালয় থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, প্রত্যেক হাটবাজারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। এ দেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম গ্রামবাংলার মেহনতি মানুষের স্থানীয় প্রতিনিধিদের ওপর হাট-বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতিসহ প্রভৃতি কাজের দায়িত্ব অর্পণ করা হলো।
গণকমিটির তত্ত্বাবধানে হাট-বাজারের নির্দিষ্ট ন্যায্য হারে তোলা আদায় করা হবে। আদায়কৃত তোলার মোট আয়ের অঙ্ক থেকে এক-তৃতীয়াংশ অর্থ সংশ্লিষ্ট হাটবাজারের উন্নতির জন্য সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করা হবে। এক-তৃতীয়াংশ অর্থ উন্নয়ন কমিটির তহবিলে জমা হবে। এ টাকা থানার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ টাকা সরকারি তহবিল ব্যয় করা হবে। এক হ্যান্ডআউটে বলা হয়, গ্রামবাংলার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হাট-বাজারগুলো বর্বর বাহিনীর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিধ্বস্ত ও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব হাট-বাজার পুনর্নির্মাণ করা হবে।