
হাফিজুর রহমান কালিগঞ্জ থেকে: বিজয়ের ৫১ তম বার্ষিকীতে নানা অব্যবস্থাপনা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) দিনভর নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্মরণ করেছে উপজেলা বাসি।
দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, থানা প্রশাসন, প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা ইউনিয়ন পরিষদ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহণ করেন। দিনের কর্মসূচি এর মধ্যে ছিল ১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ভোর সাড়ে ৫টার সময় ৩১ বার তপধ্বনির মাধ্যমে কালিগঞ্জ থানা চত্বরে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা সরকারি, শিক্ষা ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, বাসভবন, রাজনৈতিক কার্যালয় সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোহরাওয়ার্দী পার্কে অবস্থিত বিজয়স্তম্বে পুষ্প মাল্য অর্পণ করা হয়। প্রথমে উপজেলা পরিষদের পক্ষে প্যানেল চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরার নেতৃত্বে পুষ্প মাল্য অর্পণ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও মথুরেস পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম এর নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। থানা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে থানার অফিসার ইনচার্জ হালিমুর রহমান বাবু পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। কালিগঞ্জ প্রেস ক্লাব এর সভাপতি হামিদ এবং সহসভাপতি হাফিজুর রহমান সাধারণ সম্পাদক শাওন আহমেদ সোহাগের নেতৃত্বে সাংবাদিকরা পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এরপর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি নিয়াজ কাউসার তুহিনের নেতৃত্বে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এরপর একে একে কালিগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষে সভাপতি সনত কুমার গাইন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, থানা বিএনপি’র সভাপতি এবাদুল ইসলাম, জাকের পার্টির সভাপতি শাহাজাহান, জাতীয় শ্রমিক লীগের আমির আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নুরুজ্জামান, কালীগঞ্জ সরকারি পাইলট হাই স্কুল, কালিগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়, এম খাতুন প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুশীলন, সোনালী ব্যাংক, ফায়ার সার্ভিস সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুষ্প মাল্য দর্পণ করেন। রাত ১২টা ১ মিনিটে কালিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার নরিম আলী মুন্সি এবং সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট এর এর নেতৃত্বে দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে বিজয়স্তম্বে প্রশ্ন পুষ্প মাল্য অর্পণ শেষে কাক শিয়ালি সেতু সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু মুরালে পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। বিজয়স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু মুরালে নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা এবং প্যানেল চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম অতিরিক্ত পুলার সুপার আমিনুর রহমান নেতৃত্বে পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় মহৎপুর সরকারি কবরস্থানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন।
সকাল ৯ টায় উপজেলা পরিষদ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা ওই সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কালিগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ হালিমুর রহমান বাবু, উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডিপুটি কমান্ডার ও মথুরেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম।এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য এস,এম জগলুল হায়দার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য এস,এম জগলুল হায়দার বলেন,“ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বিজয়ের মাসে বিজয়ের অঙ্গীকার নিয়ে আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে ভোট দিয়ে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে।” এরপর বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস সহ বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী স্কাউটদের সমন্বয়ে কুচকাওয়াজ ও শরীর চর্চা প্রদর্শনী হয়। সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। বেলা ১১ টায় স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় বিকাল আড়াইটার সময় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মহিলাদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা ও শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল ৩টায় উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা প্রশাসন একাদশ বনাম মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয়ে এক প্রীতি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলা পরিষদ মাঠ চত্বরে এক মনোজ্ঞ সংস্কৃতি অনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক এর মাধ্যমে দিবসের সমাপ্তি ঘটানো হয়। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন রাজনৈতিক দল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথক পৃথকভাবে নানান কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।